—ফাইল চিত্র।
পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগের এক বছর সারদার মালিক সুদীপ্ত সেন কার কার সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতেন, তা যাচাই করছে সিবিআই। তাঁর এক বছরের ফোনের ‘কল ডিটেলস রেকর্ড’ বা সিডিআর সংগ্রহ করেছিল সারদা মামলায় তদন্তরত রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট)। কিন্তু বারবার বলার পরেও তারা সেটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তুলে দিতে গড়িমসি করেছে বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত যে সিডিআর হাতে পেয়েছে তারা, তাতে বিস্তর গরমিল ধরা পড়েছে বলেও দাবি করেছেন তদম্তকারী অফিসাদের একাংশ। এখন সুদীপ্ত সেনের ‘প্রভাবশালী’ যোগাযোগের সঙ্গে সিট-এর সিডিআরে গোলমাল নিয়েও খোঁজ করা হচ্ছে। সিট-এর কোন কোন সদস্য কেন সুদীপ্তর প্রভাবশালী যোগের প্রমাণ লোপাট করতে চেয়েছিলেন, তা-ও নজরে রেখেছে সিবিআই।
সিবিআই সূত্রের দাবি, টেলিগ্রাফ আইন অনুযায়ী কোনও অভিযুক্তের এক বছরের টেলিফোনের রেকর্ড খতিয়ে দেখার অধিকার রয়েছে তদন্তকারী সংস্থার। সারদা-তদন্ত শুরু হওয়ার পর সিট সেই সি়ডিআর সংগ্রহ করেছিল। কিন্তু সিবিআইয়ের হাতে তা সময়ে তুলে দেয়নি। এক সিবিআই কর্তার কথায়, ‘‘সুদীপ্ত সেনের রাজনৈতিক ও সরকারি স্তরে যোগাযোগ জানতেই আমরা এক বছরের টেলিফোনের কথোপকথনের হিসাব চাইছি। কিন্তু সিটের কাছ থেকে যা পাওয়া গিয়েছে তাতে কিছু আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।’’
সিবিআই সূত্রের খবর, সিটের কাছ থেকে পাওয়া সিডিআর-এ দেখা যাচ্ছে ২০১২ সালের মার্চ থেকে ২০১৩ এর এপ্রিল পর্যন্ত নানান ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ্ত সেন। কিন্তু ওই তালিকায় দেখা যাচ্ছে, কোনও এক মাসে সারদা-মালিক যদি ২০০টি ফোন করে থাকেন, তো পরের মাসে সেই সংখ্যা ৫০টির নীচে। অথচ সংস্থার টালমাটাল অবস্থার সময় তাঁর বেশি করে টেলিফোন করারই কথা! এখানেই গোলমাল লাগছে সিবিআইয়ের। এখন তারা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমোদন নিয়ে ফের টেলিফোন সংস্থার কাছ থেকে এক বছরের সিডিআর সংগ্রহ করছে।
এক সিবিআই কর্তার বক্তব্য, ‘‘২০১৩-র এপ্রিলের মাঝামাঝি কলকাতা ছেড়েছিলেন সুদীপ্ত সেন, দেবযানী মুখোপাধ্যায় এবং অরবিন্দ চৌহান। কাশ্মীরে যাওয়ার আগে ১৮ এপ্রিল দিল্লিতে এক তৃণমূল নেতার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন তিনি। ২২ এপ্রিল ধরা পড়েন সোনমার্গে। এই সময়ে কাদের সঙ্গে সুদীপ্তর যোগাযোগ ছিল তা জানা দরকার। সেই কাজই চলছে।’’ সিবিআই সূত্রের খবর, সোনমার্গে সুদীপ্তকে গ্রেফতারির পর যে ‘সিজার লিস্ট’ তৈরি হয়েছিল, তার থেকে দু’একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি সিট-এর কাছ থেকে হাতে পায়নি তারা। একটি লাল ডায়েরিও তার মধ্যে ছিল। এখন তারও খোঁজ চলছে।