নারদ কাণ্ডে সরকারি কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছিলেন রাজ্যের শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা। এই ঘটনা সামনে আসার পর এত দিন ধরে ঘুষের বিনিময়ে কোন কোন কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে— রাজ্যের এ বার তার খতিয়ান সংগ্রহে নামছে সিবিআই। এ জন্য রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দফতরে হানা দেওয়ার তোড়জোড় করছেন অফিসারেরা।
এ রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকে যে সব কাজের বরাত বিলি হয়েছে— তার হিসেব নিচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। সিবিআই অফিসারদের মতে, নারদ কেলেঙ্কারি দুর্নীতির এক বিশাল হিমশৈলের চুড়ো মাত্র। তলায় ছত্রে ছত্রে ছড়িয়ে রয়েছে দুর্নীতি।
প্রাথমিক তদন্তে যে তথ্যপ্রমাণ সিবিআই পেয়েছে, তাতে তারা নিশ্চিত— এ রাজ্যে ঘুষের বিনিময়ে সরকারি কাজের বরাত দেওয়া হয়। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ওই প্রভাবশালীরা যে এ ভাবে কাজ পাইয়ে দিয়ে আসছেন, তার নির্দিষ্ট কিছু তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় এই গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রের খবর, আরও তথ্যের জন্য সরকারি দফতরেও হানা দিতে পারেন অফিসারেরা। প্রয়োজনে ‘উপকৃতদের’ গ্রেফতারও করা হবে।
অভিযুক্ত রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা গত কয়েক বছরে কী ভাবে ফুলে ফেঁপে উঠেছেন, সেটাও খতিয়ে দেখার কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছে সিবিআই। এক অফিসারের কথায়, ২০০৬ সালের পর থেকে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা ওই সব নেতা-মন্ত্রীদের হলফনামা পরীক্ষা করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে আয়ের উৎস।
সিবিআই জানিয়েছে, নারদ কাণ্ডে যে ভিডিও ফুটেজ তাঁরা পেয়েছেন, সেখানকার প্রতিটি কথোপকথন অত্যন্ত একাধিক বার শোনা হয়েছে। তা থেকেই জানা গিয়েছে, প্রভাবশালী নেতারা নানা সময়ে টাকার বিনিময়ে যে নানা জনকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন— তার উদাহরণ তাঁরা ফলাও করে ম্যাথুকে বলেছেন। সেই সব কথোপকথন এখন অস্ত্র করছে সিবিআই।
নারদ কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পরে তৃণমূলের তরফে এক বার বলা হয়েছিল, নির্বাচনে তহবিল গড়ার জন্য ওই টাকা নেওয়া হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, নগদ টাকা দেওয়ার পরেও ম্যাথুকে কোনও চাঁদার রসিদ দেওয়া হয়নি। সে ক্ষেত্রে এটা ঘুষ বলেই ধরা হবে।
ম্যাথুর দেওয়া টাকা ঘুষের অগ্রিম হিসেবেই ধরে নেওয়া হয়েছে।