রাজীব-কাণ্ডে রাজভবনের ভূমিকায় ‘অখুশি’ নবান্ন

রাজ্যের শীর্ষ আমলাদের ভূমিকা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে যে ভাবে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন বলে খবর, তাতে ‘ব্যথিত’ নবান্নের শীর্ষমহল। 

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

‘সিপি’র দরজায় সিবিআই’ পর্বে রাজভবনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ নবান্ন। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী রাজ্যের ‘স্বার্থ’ না দেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্যের শীর্ষ আমলাদের ভূমিকা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে যে ভাবে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন বলে খবর, তাতে ‘ব্যথিত’ নবান্নের শীর্ষমহল।

Advertisement

একটি সূত্রের দাবি, সিবিআইয়ের তৎপরতার আগাম আঁচ পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের সাহায্য চেয়েছিলেন। তার পরেও রাজভবন ‘সদর্থক’ কিছু করেনি।

নবান্নের খবর, রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের সিদ্ধান্তে সিবিআইয়ের সদর দফতর চূড়ান্ত সিলমোহর দিয়েছিল গত শুক্রবার। শনিবার রাজ্য পুলি‌শের ডি়জি বীরেন্দ্র’র সঙ্গে সিবিআইয়ের কার্যনির্বাহী অধিকর্তা নাগেশ্বর রাওয়ের এই মর্মে ফোনে কথাও হয়েছিল। ঠিক হয়, তদন্তে সহযোগিতা করবেন রাজীব কুমার। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে তাঁর ‘ক্ষোভের’ কথা জানিয়েছিলেন। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ‘অন্যায়ভাবে’ রাজ্যে হানা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

আরও পড়ুন: ধর্নায় কেন? রাজীবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলল কেন্দ্র, উনি ধর্নায় বসেননি, বললেন মমতা

নবান্নের সূত্রের দাবি, রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন যে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কথা দিল্লিকে জানাবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। তার পরেও রবিবার সন্ধ্যায় সিবিআইয়ের দল রাজীব কুমারের দরজায় পৌঁছে যায়। নবান্নের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধের পরও রাজভবনের আশ্বাসের কোনও প্রভাব চোখে পড়েনি। বরং রবিবার রাতে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি’কে রাজভবনে হাজির হতে বলেন রাজ্যপাল।

স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্যের নিকটাত্মীয় অসুস্থ থাকায় তিনি যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। মুখ্যসচিব এবং ডিজি জানান, তাঁদের তখনই যেতে সমস্যা রয়েছে। রাজভবন জানিয়ে দেয়, রবিবার রাতেই যেতে হবে। তখন তাঁরা যান। নবান্ন জেনেছে, মুখ্যসচিব ও ডিজি যে প্রাথমিক ভাবে রাজভবনে যেতে অস্বীকার করেছিলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠানো রিপোর্টে তা উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল। যা জেনে ক্ষুব্ধ নবান্ন।

রাজভবন অবশ্য নবান্নের বক্তব্য মানতে চায়নি। রাজভবনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সে রাতে সিবিআই এবং কলকাতা পুলিশ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গোলমালে জড়িয়ে পড়েছিল। সিবিআইয়ের কাজে বাধা দিয়েছিল পুলিশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ তাঁর কাছে ঘটনার কথা জানতে চেয়েছিলেন। ফলে রাজ্যপাল মুখ্যসচিব ও ডিজি’কে ডেকে অন্যায় করেননি। বরং রাজভবনে গিয়ে মুখ্যসচিব ও ডিজি জানান, সিপি’র বাড়িতে যাওয়া ব্যক্তিরা আদতে ‘সিবিআই’য়ের কি না, জানতেই তাঁদের আটক করা হয়েছিল। এছাড়া, কলকাতা হাইকোর্টের জেরায় স্থগিতাদেশ দেওয়ার পরও সিবিআই গিয়েছে। যদিও রাজ্যপাল পরে জানতে পারেন, সিপি-র ক্ষেত্রে সরাসরি এমন কোনও স্থগিতাদেশ ছিল না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠানো রিপোর্টে তার প্রতিফলন হয়ে থাকতে পারে বলে রাজভবন সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন