সরকারের সঙ্গে সারদার যৌথ উদ্যোগের প্রকল্পগুলির সম্পর্কে তথ্য পেতে চাইছে সিবিআই। এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের কাছে চেয়েও কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে তাদের অভিযোগ।
একটা প্রকল্পে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করেছিল সুদীপ্ত সেনের সারদা। জঙ্গলমহলে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছিল সেই প্রকল্পে। কেনা হয়েছিল বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্সও।
এ ছাড়াও ফিল্ম সিটি, ট্যুরিজম পার্ক, আবাসন-সহ আরও কয়েকটি প্রকল্প রাজ্যের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করার কথা ছিল সারদার। সেগুলি নিয়ে কথাবার্তাও এগিয়েছিল। সারদার দুই কর্তা সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে জেরা করেই এই সব তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে সিবিআইয়ের দাবি।
এই ধরনের প্রকল্পগুলির তথ্য হাতে পেতে চাইছে সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, প্রভাবশালীদের যোগসুত্র পেতে ওই সব নথিপত্র অনেকটাই সাহায্য করবে। সিবিআইয়ের অভিযোগ, নির্দিষ্ট করে এই সব প্রকল্পের কোনও তথ্যই রাজ্য পুলিশ তাদের দিচ্ছে না। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টেও লিখিত ভাবে এই অভিযোগ জানিয়েছে সিবিআই। সেই আবেদনের পরে সম্প্রতি সিবিআইয়ের সল্টলেকের অফিসে গিয়ে কিছু তথ্য-প্মাণ জমা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছেন সিআইডি-র কর্তারা। কিন্তু, সরকারি প্রকল্পে সারদার যোগসূত্র সংক্রান্ত কোনও তথ্যই তাদের দেওয়া হয়নি বলে জানাচ্ছে সিবিআই। সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, সল্টলেকে সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিসের সিসিটিভি-র ফুটেজ ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সিটের কাছে চাওয়া হয়েছিল। এগুলি সিটের হাতে থাকলেও তারা দেয়নি।
কাশ্মীরের সোনমার্গ থেকে ২০১৩-র এপ্রিলে সুদীপ্ত ও দেবযানীকে গ্রেফতার করার পরেই সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য ‘সিট’ (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করে রাজ্য পুলিশ। সারদার বিভিন্ন অফিস থেকে প্রচুর নথি বাজেয়াপ্ত করে সিট। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালে সারদা মামলা সিবিআইয়ের হাতে আসে। সিট-এর হাতে থাকা সারদা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু সিবিআইয়ের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশ সে নির্দেশ মানেনি।
সিআইডি কর্তারা বলছেন, সারদা কাণ্ডে সিট-এর তদন্তকারীরা রাজ্য জুড়ে ২৭৩টি মামলা দায়ের করেন। সেই সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা অবশ্য বলছেন, সম্প্রতি যে তথ্যপ্রমাণ সিআইডি জমা দিয়েছে, সেগুলি যাচাই করার কাজ চলছে। এখনও পর্যন্ত সেখান থেকে আশাপ্রদ কিছু পাওয়া যায়নি।
চাহিদা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যদি সিআইডির কাছ থেকে পাওয়া না-যায়, তা হলে কী হবে? সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছি। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
সিআইডির এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে সিবিআইয়ের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সিবিআইয়ের চাহিদা অনুযায়ী সব তথ্য দেওয়া হয়েছে। আরও কোনও তথ্য রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’