এটিএম জালিয়াতি। —ফাইল চিত্র।
এটিএম প্রতারণার রেশ এ বার সংসদেও। রাজ্যের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে হওয়া এটিএম জালিয়াতি নিয়ে আজ সংসদে সরব হন তৃণমূল নেতারা। মুখ খোলেন কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীও। যদিও এত কিছুর পরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল সব অভিযোগে জল ঢেলে জানান, পশ্চিমবঙ্গে হওয়া জালিয়াতির বিষয়ে তাঁর কাছে খবর নেই। পরে অর্থ মন্ত্রকের তরফেও একই দাবি করা হয়। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্বে কে রয়েছেন সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। আসলে নেতৃত্ব দুর্বল। তাই এত জালিয়াতির ঘটনা ঘটে যাওয়া সত্ত্বেও সরকার খবর রাখছে না।
গত কয়েক দিন ধরেই কলকাতা ও শহরতলির বেশ কিছু থেকে ব্যাঙ্কের এটিএমে জালিয়াতির একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। গ্রেফতার হয়েছে কয়েক জন বিদেশিও। গত কাল যা নিয়ে উদ্বেগ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে সংসদেও সরব হতে দলকে নির্দেশ দেন তৃণমূল নেত্রী। সেই মতো আজ লোকসভার জিরো আওয়ারে বিষয়টি তোলেন তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এটিএমে স্কিমার নামে একটি যন্ত্র বসিয়ে গ্রাহকদের টাকা চুরি করে নিচ্ছে জালিয়াতেরা। একাধিক গ্রাহক ব্যাঙ্ক জালিয়াতির শিকার হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি এটিএমে জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে দিল্লি, মুম্বই, জয়পুর, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরুর মতো শহরেও। গ্রেফতার হয়েছে রোমানিয়া ও নাইজেরিয়ার বেশ কয়েক জন নাগরিক।’’ যে ভাবে জালিয়াতি হচ্ছে তাতে ব্যাঙ্কে টাকা রাখা আদৌও সুরক্ষিত কি না সে প্রশ্ন তুলে সুদীপবাবু বলেন, ‘‘ গ্রাহকদের অর্থ বাঁচাতে ব্যাঙ্ক ও এটিএমগুলিতে বাড়তি সুরক্ষার বন্দোবস্ত করা উচিত।’’ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘‘কিছু লোক টাকা নিয়ে বিদেশ পালিয়ে যাচ্ছে। কিছু লোক এটিএম থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। মানুষ টাকা রাখবে কোথায়?’’
রাজ্যসভায় তৃণমূলের মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করে জালিয়াতরা টাকা সরিয়ে ফেলছে। কেন্দ্রের উচিত এই সাইবার ক্রাইম রোধে পদক্ষেপ নেওয়া।’’ রাজ্যসভায় উপস্থিত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল অবশ্য বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে যে ব্যাঙ্ক-এটিএমে জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে আমার কাছে কোনও তথ্য নেই। তথ্য পাওয়া গেলে সরকার পদক্ষেপ করবে।’’ পরে অর্থ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়, পশ্চিমবঙ্গে যদি বড় কোনও ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা ঘটত, তা হলে মন্ত্রকের কাছে ঠিকই খবর আসত। ছোট ঘটনাকে পরিকল্পিত ভাবে বড় করে দেখানো হচ্ছে।