স্কুলে খাবার নিয়ে কমিটি কেন্দ্রেরও

স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, মিড-ডে মিল নিয়ে নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। সেই জন্যই কমিটি গঠন করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষা মহল সূত্রের খবর, কেন্দ্রের কাছেও এই অভিযোগ পৌঁছেছে।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৭ ১১:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

অনেক স্কুলে কচিকাঁচাদের মুখের গ্রাস নিয়েও কারচুপির অভিযোগ ওঠায় কমিটি গড়ে আগেই নজরদারি ও তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য সরকার। স্কুলে মিড-ডে মিল বণ্টন ঠিক ভাবে হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে একই ভাবে এ বার সক্রিয় হল কেন্দ্রীয় সরকার। দিল্লি সূত্রের খবর, কমিটি গঠন করে বণ্টন ব্যবস্থার সামগ্রিক রিপোর্ট তৈরি করতে চলেছে তারা। হচ্ছে রাজ্য-ভিত্তিক সমীক্ষাও।

Advertisement

সম্প্রতি কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে মিড-ডে মিল নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। জাভড়েকর বলেন, ‘‘অধিকাংশ স্কুলই ‘মিড-ডে মিল স্কুল’ নামেই পরিচিত হয়ে গিয়েছে। এসো, খাও আর যাও।’’ কিন্তু সেই মিড-ডে মিল নিয়েও পরের পর অভিযোগ উঠছে। সেই সব অভিযোগ নিয়ে রাজ্য সরকারের চিন্তা যে কিছু কম নয়, কমিটি গড়ে তদন্ত ও সমীক্ষাই তার প্রমাণ। কেন্দ্রও যে বসে নেই, মিড-ডে মিল নিয়ে সামগ্রিক রিপোর্ট তৈরির উদ্যোগই সেটা জানান দিচ্ছে বলে শিক্ষা শিবিরের অভিমত।

স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, মিড-ডে মিল নিয়ে নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। সেই জন্যই কমিটি গঠন করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষা মহল সূত্রের খবর, কেন্দ্রের কাছেও এই অভিযোগ পৌঁছেছে।

Advertisement

কিন্তু এত যাচাই বা তদন্তের প্রয়োজন হচ্ছে কেন?

শিক্ষাজগতের অভিযোগ, বহু স্কুল তো পড়ুয়াদের সংখ্যাতেই গরমিল করছে। ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কম। তবু সেই সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ ডিম তাদের পাতে পড়ছেই না, চলে যাচ্ছে অন্যত্র। তার ভিত্তিতে মিড-ডে মিল খাতে বরাদ্দ অর্থ খরচের হিসেবও দেওয়া হচ্ছে।

২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইন অনুসারে মিড-ডে মিলে সপ্তাহে কোন দিন কী খাবার দিতে হবে, সেই তালিকা দেওয়া আছে। তালিকায় রয়েছে ভাত, ডাল, তরিতরকারি, মাছ, ডিম ও খিচুড়ি। কিন্তু অভিযোগ উঠছে, অনেক জায়গায় সেই তালিকা অনুযায়ী খাবার দেওয়া হয় না। মাছ-ডিম তো দূরের কথা, ডাল-আলুও জোটে না বহু স্কুলে।
স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, শিশুদের শরীরে যে-হারে বিভিন্ন ভিটামিনের প্রয়োজন, মূলত তার ভিত্তিতেই খাদ্য-তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা মানা হয় না।

পড়ুয়াদের খাবারের সঙ্গে সঙ্গে স্কুলে তাদের খাওয়ার জায়গা বা পরিকাঠামো নিয়েও সমস্যা রয়েছে। শিক্ষার অধিকার আইনে মিড-ডে মিল খাওয়ার জন্য পৃথক ঘর রাখার শর্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের অনেক স্কুলেই যে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য আলাদা কোনও ঘরের ব্যবস্থা নেই, তা মানছেন দফতরের কর্তারা।

কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোন রাজ্যের কোন কোন স্কুল নিয়মবিধি মানছে না, তার সবিস্তার রিপোর্ট তৈরি করা হবে। পরে সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় স্কুলশিক্ষা সচিব অনিল স্বরূপ সম্প্রতি কলকাতায় এসে বলেছেন, ‘‘সমীক্ষা-রিপোর্টের ভিত্তিতে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ ঠিক করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন