অস্ত্র জাতীয়তাবাদ, দিলীপের পাশে রুডি

প্রতি দিন মুখের লাগাম হারিয়ে আক্রমণাত্মক হচ্ছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তার পরেও তাঁকে লাগাম পরাতে নারাজ বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৬ ০৪:১৯
Share:

কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে রাজীবপ্রতাপ রুডি। ছবি: সুমন বল্লভ।

প্রতি দিন মুখের লাগাম হারিয়ে আক্রমণাত্মক হচ্ছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তার পরেও তাঁকে লাগাম পরাতে নারাজ বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কলকাতায় রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীবপ্রতাপ রুডির মন্তব্যে তেমনই ইঙ্গিত মিলল। যা থেকে আরও বোঝা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে জাতীয়বাদের অস্ত্রে শান দিয়েই মেরুকরণের রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি।

Advertisement

দিলীপবাবু শনিবার গোসাবায় দলীয় সভায় হুমকি দেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলছে। বাইরে বললে জুতিয়ে সোজা করে দেব। চোদ্দো পুরুষের নাম ভুলিয়ে দেব।’’ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ‘দেশবিরোধী’ স্লোগান দিয়েছে, এর আগে তাঁদের কলার ধরে বের করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন দিলীপবাবু। গোপীবল্লভপুরে এ দিন তিনি জানিয়েছেন, এটাই তাঁদের সংস্কৃতি। উত্তম মঞ্চে এ দিন বিজেপি-র বুদ্ধিজীবী সেলের সভার ফাঁকে দিলীপবাবুর মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রুডি বলেন, ‘‘জাতীয়তাবাদী মানুষ দেশবিরোধী কিছু শুনলে রেগে যায়। তখন কিছু শব্দ তাঁদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে। বিজেপি জাতীয়তাবাদী দল। রাজ্য সভাপতিও জাতীয়তাবাদী। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতিই এমন, যে তাঁর মুখ থেকে ওই শব্দগুলো বেরিয়েছে।’’ রুডি দিলীপবাবুর মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেও রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে এ বিষয়ে অস্বস্তি আছে। দলেরই একাংশের মতে, সাংগঠনিক ভাবে ভোটে দাগ কাটতে পারবেন না বুঝেই রাজ্য সভাপতি এই ধরনের কুরুচিকর কথা বলে বাজিমাৎ করতে চাইছেন। দলের অন্য একটি অংশের
মতে, রাজ্য সভাপতি হওয়ার সময় দিলীপবাবুর পরিচিতি ছিল কম। তাই বিতর্কিত কথা বলে প্রচারের আলোয় আসার চেষ্টা করছেন তিনি। দিলীপবাবুর মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শব্দ চয়ন, শরীরী ভাষা একান্তই ব্যক্তিগত।’’

গেরুয়া শিবিরের ওই বুদ্ধিজীবী সভায় এ দিন জাদুকর পি সি সরকার, আর কে হান্ডা, বিক্রম সরকার, শিশির বাজোরিয়া, জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্র বসু, স্বরূপপ্রসাদ ঘোষ প্রমুখ ছিলেন। তাঁদের রুডি এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র বার্তা, তাঁরা চাইলেই আসন্ন ভোটে রাজ্যের ভাগ্য বদলে দিতে পারেন। রুডির বক্তব্য, এ রাজ্যের মানুষ কংগ্রেস, কমিউনিস্ট ও তৃণমূলের শাসন দেখেছেন। এখন এ রাজ্যে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। মানুষ পরিবর্তন চাইছেন। সেই পরিবর্তন আসন্ন এবং বিজেপি-র হাত ধরেই তা হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি, ‘‘পি সি সরকারের থেকেও বড় জাদুকর কৈলাস বিজয়বর্গীয় এ রাজ্যে দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন। তিনি মধ্যপ্রদেশের সবচেয়ে বড় নেতা। তাঁর হাতযশেই এ রাজ্যে বিজেপি-র সরকার হবে।’’ আর সরকার যদি না হয়, তা হলে বিজেপি সরকার গড়ার ক্ষেত্রে নির্ণায়ক শক্তি হবে বলেও রুডি আশা প্রকাশ করেন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন