Cyclone Amphan

আমপানের ক্ষতি যাচাইয়ে ‘জিয়ো ট্যাগিং’ কেন্দ্রের

দলের এক সদস্য জানান, কেন্দ্রীয় দল রাজ্যের দাবি কতটা ‘যুক্তিযুক্ত’, তা খতিয়ে দেখতে প্রযুক্তি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত শুনে দেখবে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২০ ০৪:২৪
Share:

ছবি এপি।

আমপানের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুনর্গঠনের কাজে এক লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ চেয়েছে রাজ্য সরকার। নবান্নের কাছ থেকে নথিপত্র নিয়ে দিল্লি ফিরে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। পরের সপ্তাহে এ সংক্রান্ত প্রথম বৈঠক হতে পারে বলে মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

দলের এক সদস্য জানান, কেন্দ্রীয় দল রাজ্যের দাবি কতটা ‘যুক্তিযুক্ত’, তা খতিয়ে দেখতে প্রযুক্তি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত শুনে দেখবে। এর পরে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট করে দেওয়া নির্দেশিকা মেনে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। সেই রিপোর্ট যাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে। তিনিই বাংলার প্যাকেজ নির্দিষ্ট করবেন। রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় দলের প্রধান অনুজ শর্মা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব।

প্রতিনিধি দলের একাধিক সদস্য জানান, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলের টাকা কী ভাবে বরাদ্দ ও ব্যয় হবে, তা অর্থ কমিশন ঠিক করে দেয়। সেই সূত্র মেনে রাজ্যের হাতে বিপর্যয় মোকাবিলার কত টাকা রয়েছে, আগামী কয়েক বছরে আরও কত টাকা পৌঁছবে, তা দেখা হবে। এর পরে রাজ্যের দাবির যৌক্তিকতা দেখবে কেন্দ্রীয় দল। নর্থ ব্লকের পাঠানো দলে আমলা ছাড়াও ইঞ্জিনিয়ার এবং কৃষি বিজ্ঞানীরা ছিলেন। তাঁরা নিজেরাই দুই ২৪ পরগনায় পরিস্থিতি দেখে গিয়েছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: সাহায্য চেয়েও মেলেনি! শ্রমিক স্পেশালে শিশুকন্যার মৃত্যু

রাজ্যের বক্তব্য, ১৬টি জেলায় ২৮ লক্ষ ৫৬ হাজার ঘর ভেঙে গিয়েছে। তার জন্য চাওয়া হয়েছে ২৮ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। শিল্পের জন্য ২৬ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। রাজ্যের ৩০১টি কলেজ এবং ১৪ হাজার ৬৪০টি বিদ্যালয়ও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ১৭ লক্ষ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত চাষের জমির জন্য ১৬ হাজার কোটি, ২১০০ কিলোমিটার রাজ্য সড়ক এবং ১০ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কের জন্য ২১০০ কোটি এবং ২৪৪ কিলোমিটার নদী ও সমুদ্র বাঁধের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় দলের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় কোন পঞ্চায়েতে কত কাঁচা বাড়ি রয়েছে, তার তালিকা সরকারের কাছে রয়েছে। গত ছ’বছরে কোন বাড়ি পাকা হয়েছে, তারও জিয়ো-ট্যাগিং করা আছে। ফলে ২৮ লক্ষ বাড়ি ভেঙেছে কি না, এত সংখ্যক কাঁচা বাড়ি আছে কি না, তা পরখ করে নেওয়া যাবে। গ্রামীণ রাস্তার ক্ষেত্রেও প্রতিটি তৈরি হওয়া পাকা রাস্তার অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ ধরে নির্দিষ্ট করা রয়েছে। এ ছাড়া বনসৃজন, মৎস্যচাষের ক্ষেত্রেও ই-ভুবন জিআইএস ম্যাপিংয়ের তথ্যপঞ্জি থেকে মিলিয়ে দেখে নেওয়া যাবে।’’ তিনি জানান, উপগ্রহচিত্রের সাহায্যে ‌কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে (নকল ঝড় সৃষ্টি করে) বুঝে নেওয়া যাবে ঠিক কোন কোন এলাকার উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে, তার প্রভাব কোথায় কতটা পড়েছে।

আরও পড়ুন: সিএমও-র কর্মিবাহী বাসচালকও আক্রান্ত

নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, ‘‘আমপানের পরে জেলাশাসকেরা যে সব মৌজা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন, তার চাষবাস, ঘরবাড়ির ক্ষতি তুলে ধরা হয়েছে। ঝড়ের ১২ দিন পরে কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে এসেছে। এখন যত দ্রুত সম্ভব ওরা প্যাকেজ ঘোষণা করুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন