‘আমার ভাগ্যে কি এ-ই ছিল!’ খেদ যাচ্ছে না ১০০ বছরের ধর্ষিতার

সোমবার রাতে চাকদহে চান্দুরিয়া ১ পঞ্চায়েতের গঙ্গাপ্রসাদপুর গ্রামের বাড়িতে বছর বিশের এক যুবক ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযো‌গ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাস্তার ধারে দোতলা বাড়ির নীচতলায় ঘরের মেঝেতে শুয়ে তিনি। গায়ে চাদর ঢাকা। তাঁকে ঘিরে পরিবারের লোকেরা। বারবার বৃদ্ধা একটা কথাই বলছেন, ‘‘আমার ভাগ্যে কি এ-ই ছিল!” মাঝে-মধ্যে তিনি খেই হারিয়ে ফেলছেন। কী বলতে চাইছেন, তা বাড়ির লোকেরাও বুঝতে পারছেন না। সোমবার রাতে চাকদহে চান্দুরিয়া ১ পঞ্চায়েতের গঙ্গাপ্রসাদপুর গ্রামের বাড়িতে বছর বিশের এক যুবক ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযো‌গ। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অভিজিৎ ওরফে অর্ঘ্য বিশ্বাস নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করে। বর্তমানে সে জেল হেফাজতে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে চাকদহ শহরে বৃদ্ধার ছেলের বাড়িতে যান রাজ্য মহিলা কমিশনের সহ-সভানেত্রী তথা চাকদহের বিধায়ক রত্না ঘোষ। বৃদ্ধা এখন সেখানেই রয়েছেন। বিকেলে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির তরফে চাকদহ শহর থেকে গঙ্গাপ্রসাদপুরের বাড়ি পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল ও পথসভা করা হয়। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সোমা দাস, জেলা সম্পাদিকা লিপিকা বিশ্বাসেরা।

বছর চারেক আগে চাকদহ ব্লকের মদনপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে অবসর নিয়েছেন বৃদ্ধার এক মাত্র ছেলে। চাকদহ শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাঠালপুলিতে বাড়ি করেছেন তিনি। মঙ্গলবার থেকে ওই বাড়িতেই রয়েছেন ওই বৃদ্ধা। এর আগে বহু বার তাঁকে ডেকেও শ্বশুরের ভিটে থেকে এই বাড়িতে নিয়ে আসা যায়নি।

Advertisement

বৃদ্ধার ছেলে বলেন, “বারবার মাকে এ বাড়িতে আসতে বলেছিলাম। রাজি হননি। আমি প্রতি দিন গ্রামের বাড়িতে মাকে দেখতে যেতাম। খাবার দিয়ে আসতাম। আমার মায়ের মতো অবস্থা যেন কারও না হয়।” তিনি আরও বলেন, “এখন শুনছি, যে ছেলে ওই জঘন্য কান্ড ঘটিয়েছে, সে নাকি আগেও অনেক অপরাধমূলক কাজ করেছে। কেউ কোনও প্রতিবাদ করেনি। আমি শেষ দেখে ছাড়ব।”

বৃদ্ধার ছেলের বাড়িতে এসেছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য তীব্রজ্যোতি দাস এবং গঙ্গাপ্রসাদপুর গ্রামের বাসিন্দারাও। তীব্রজ্যোতি বলেন, “ওঁদের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের পরিচয়। আমরা ওই পরিবারের পাশে আছি।” গঙ্গাপ্রসাদপুরের বাসিন্দা বাদল হালদার বলেন, “খুব বেশি দূর লেখাপড়া করেনি অর্ঘ্য। এলাকায় নানা রকমের খারাপ কাজ করত। খারাপ স্বভাবের জন্য কেউ তাকে কাজে রাখতে চাইত না। এ বার জঘন্য কাণ্ড ঘটিয়ে বসল!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন