মুগ্ধ: শাড়ি প্রণামী দিয়ে পুজো দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার দুপুরে পালপাড়া সর্বজনীনের মণ্ডপে। ছবি: দীপঙ্কর দে
এই শহরের শোভাযাত্রাকে ‘মডেল’ করে কলকাতায় দুর্গাপুজোর কার্নিভাল শুরু হয়েছে। এ বার চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর সামগ্রিক আয়োজনকেই কলকাতার দুর্গাপুজোর সঙ্গে একই বন্ধনীতে এনে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার দুর্গাপুজোর মতোই এখানেও ‘বিশ্ব বাংলা সম্মান’ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বেশ কয়েক বার চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর মণ্ডপে ঘুরে গিয়েছেন মমতা। এবারও তার অন্যথা হল না। শুক্রবার, অষ্টমীর দুপুরে তিনি শহরের পালপাড়া সর্বজনীনের মণ্ডপ ঘুরে গেলেন। কুটির মাঠে হেলিকপ্টার থেকে নেমে গাড়িতে চেপে মণ্ডপে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘড়ির কাঁটায় তখন দু’টো বাজতে মিনিট কয়েক বাকি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ রত্না দে নাগ এবং বিধায়ক তথা পর্যটন দফতরের প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। পালপাড়া সর্বজনীননের পুজোর এ বার ৭৫ বছর। মণ্ডপে তুলে আনা হয়েছে এক টুকরো আন্দামান। সেখানে জারোয়াদের জীবনকাহিনী ফুটে উঠেছে।
মণ্ডপে ঢুকে অঞ্জলি দেন মমতা। পাশেই রাস্তার ধারে মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। নাতিদীর্ঘ বক্তব্যে চন্দননগরের পুজো আয়োজনের প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পালপাড়ার মণ্ডপে এসে যা দেখলাম, তাতে তো এখানকার পুজো মনে হয় কলকাতাকেও হারিয়ে দেবে। যে ভাবে এঁরা তৈরি করেছেন, ইট ইজ ফ্যানটাস্টিক।’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘দুর্গাপুজোয় বিশ্ব বাংলা সম্মান দিই। এ বার থেকে এখানেও তা চালু করলাম। ১০টা পুরস্কার দেওয়া হবে।’’ জেলার পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের তিনি নির্দেশ দেন কয়েক জন বিশিষ্ট মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কমিটি গড়ে সেরা পুজো বাছাই করতে।
রবিবার চন্দননগরে ভাসানের শোভাযাত্রা। তার জন্য এ দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন রাস্তার ধারে ট্রাকে আলো সাজানোর কাজ চলছে। হেলিকপ্টার থেকে নেমে গাড়িতে আসার সময় তা চোখ এড়ায়নি মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর সঙ্গেই কি সুন্দর ভাবে কার্নিভালের প্রস্তুতি চলছে। এখানকার কার্নিভাল দেখেই কলকাতায় দুর্গাপুজোয় কার্নিভাল চালু করেছি। কলকাতার পুজোগুলিকে বলব, এখান থেকে আইডিয়া নিয়ে পুজোর সঙ্গেই যেন পরিকল্পনা করে কার্নিভালের প্রস্তুতি শুরু করে।’’
আলোর শহরে এসে তুষ্ট মমতার বক্তব্য, ‘‘চন্দননগরের প্লাস পয়েন্ট এখানকার আলো। চন্দননগরের লাইটিং না দেখলে যেন পুজো জমে না।’’ ইন্দ্রনীলের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখানকার পুজোর ম্যাপ টুরিজমের সাইটে দিয়ে দাও। ভালভাবে মার্কেটিং কর।’’
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন কুটির মাঠ সংস্কারের জন্য ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ভাল ভাবে রং করে, আলো দিয়ে মাঠটাকে সাজিয়ে দিন। জেলাশাসকের কাছে টাকা এসে যাবে।’’