—প্রতীকী ছবি।
দেশ জুড়ে ডাকা সাধারণ ধর্মঘটের দু’দিনই অভিন্ন জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা পড়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে পরীক্ষার দিন পরিবর্তন করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানাল বামেরা। আগামী ৮ ও ৯ জানুয়ারি বিমান বা ট্রেনের টিকিট যাঁরা কেটে ফেলেছেন, তাঁদেরও যাত্রার দিন বদলানোর আর্জি জানিয়েছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।
কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমিক ও আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে এবং একগুচ্ছ দাবি নিয়ে জানুয়ারিতে দু’দিন সাধারণ ধর্মঘট ডেকেছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। সেই ধর্মঘটকেই এ রাজ্যে সমর্থন করছে ১৭টি বাম দল। ধর্মঘটের সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়ে বর্ষশেষের দিন প্রথমে বামফ্রন্ট ও পরে ১৭ বাম দলের বৈঠকের পরে বিমানবাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার ৮ ও ৯ তারিখ পরীক্ষা রেখেছে। এ রাজ্যের প্রায় সওয়া লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীর ওই পরীক্ষা দেওয়ার কথা। তারা পরীক্ষা দিতে যাবে কী করে? তাদের বিড়ম্বনার কথা বিবেচনা করে পরীক্ষার দিন বদলের দাবি জানাচ্ছি কেন্দ্রের কাছে।’’ সেই সঙ্গেই সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁর আহ্বান, ‘‘যান চলাচলের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরাও ধর্মঘট করবেন। ওই দু’দিন বাইরে বেরিয়ে ঝামেলায় পড়বেন কেন? বাস-ট্রেন পাওয়ার অনিশ্চয়তা থাকবে। তাই যেখানে যাওয়ার কথা, আগেই তা পরিবর্তন করে নিন।’’
কিন্তু তাঁরাই বা পরীক্ষার দিন ধর্মঘট ডাকলেন কেন? বিমানবাবুর জবাব, ‘‘পরীক্ষার দিন দেখেই ধর্মঘট করা হয়। গত সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় শ্রমিক কনভেনশন করে ধর্মঘটের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। তার পরে প্রচার হচ্ছে দেশ জুড়ে, নোটিসও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও কেন্দ্র ওই দু’দিনই পরীক্ষার দিন ফেলেছে। পরীক্ষার দিনে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, এমন নয়।’’
প্রতিরক্ষা, ইস্পাত, তেল, বিমা, ডাকঘর-সহ সরকারি ক্ষেত্রেই ধর্মঘট হবে বলে জানিয়েছেন বাম নেতৃত্ব। কর্মী-সমর্থকদের প্রতি বিমানবাবু এ দিন আহ্বান জানিয়েছেন, ‘‘শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করবেন। যান চলাচল যাতে না হয়, তার ব্যবস্থা করবেন।’’ তা হলে কি রাস্তায় পিকেটিং, অবরোধ হবে? বিমানবাবুর বক্তব্য, ‘‘কর্মীরা রাস্তায় থাকবেন। যাঁরা গাড়ি চলাচলের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের ধর্মঘটে সামিল করার কথা বলছি। অবরোধ কোথাও হবে কি না, সেটা পরিস্থিতি বিচারে স্থানীয় স্তরে সিদ্ধান্ত হবে।’’ যে হেতু ধর্মঘটের ১০০% বক্তব্যই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এবং সংসদে কেন্দ্রের ওই সব নীতি তৃণমূল সমর্থন করেনি, তাই ধর্মঘটে বাধা না দিতে শাসক দলের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘ধর্মঘট যাঁরা সমর্থন করছেন না, তাঁরা বাড়িতে থাকুন!’’