মাথাভাঙার ও-পারে ওরা কারা, ভয়ে কাঁটা চরমেঘনা

তিরতিরে মাথাভাঙার ওপারে ওরা কারা? ওই যে পাটখেত ফুঁড়ে এ দিকেই এগিয়ে আসছে! ‘‘কারা আবার, রোজদিনই তো ওরা এ দিকে আসে। তারপর মাথাভাঙার ওপারে নিজেদের জমিতে কাজ সেরে বাড়ি যায়।’’ বন্ধুর সংশয় দেখে আশ্বাস দিচ্ছেন চরমেঘনার অনিমেষ মাহাতো।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৮
Share:

অরঙ্গাবাদের দেওয়াপুর সীমান্তে অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

তিরতিরে মাথাভাঙার ওপারে ওরা কারা? ওই যে পাটখেত ফুঁড়ে এ দিকেই এগিয়ে আসছে!

Advertisement

‘‘কারা আবার, রোজদিনই তো ওরা এ দিকে আসে। তারপর মাথাভাঙার ওপারে নিজেদের জমিতে কাজ সেরে বাড়ি যায়।’’ বন্ধুর সংশয় দেখে আশ্বাস দিচ্ছেন চরমেঘনার অনিমেষ মাহাতো। সেনাবাহিনীতে কর্মরত চরমেঘনার অনিমেষবাবু একা নন, ঢাকার গুলশানের ঘটনার পরে কাছারিপাড়ার শঙ্কর মণ্ডল, জঙ্গিপুরের কাইজার হোসেন সকলেরই এখন একটাই প্রশ্ন—ওরা কারা?

হোগলবেড়িয়ার কাঁটাতারের বেড়ার ওপারের গ্রাম চরমেঘনা। গ্রামের প্রান্তে মাথাভাঙা। ওপারে কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ। নিজ ভূমে পরবাসী হয়ে থাকা চর মেঘনার দীর্ঘ দিনের দাবি, কাঁটাতারের বেড়া হোক মাথাভাঙার এপার দিয়ে। তাহলে গ্রামের নিরাপত্তা বাড়বে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ‘‘ভোট এলেই শুনি বেড়ার কাজ শুরু হবে। তারপর ভোট ফুরোতেই সে সব প্রতিশ্রুতি হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।’’

Advertisement

অনিমেষবাবু বলছেন, ‘‘সীমান্তের অন্য গ্রামের সঙ্গে আমাদের গ্রামের কিন্তু মিল নেই। আমরা রয়েছে কাঁটাতারের বাইরে। তিরতিরে মাথাভাঙা পেরিয়ে এই গ্রামে সহজেই বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা ঢুকে পড়তে পারে। এর আগে একাধিক বার এই গ্রামে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা এসে হামলা চালিয়েছে। ওপার বাংলায় এমন অস্থিরতা হলে আমাদের গ্রামে ভয়টাও তাই বেড়ে যায়। নদীর ওপারে সাধারণ কোনও মানুষ দেখলেও অন্য কিছু মনে হয়।’’

গুলশানের ঘটনার পরে বিএসএফ সতর্ক করেছেন গ্রামের বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দা তথা করিমপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ উত্তম সর্দার বলছেন, ‘‘গ্রামে একসময় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য রুখতে আমরা রাত পাহারা দিতাম। বিএসএফকেও এ বারেও বলেছি সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে খবর তো দেবই, প্রয়োজনে ওদের সঙ্গে রাতে পাহারাও দেব।’’ কাছারিপাড়ার শঙ্কর মণ্ডল বলছেন, ‘‘আমাদের এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। পদ্মাতেও তেমন জল নেই। তাই আমরাও সতর্ক থাকছি। তেমন কিছু ঘটলেই পুলিশ ও বিএসএফকে জানাব।’’

জঙ্গিপুরের বড়শিমুল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের কাইজার হোসেন বলছেন, ‘‘বিএসএফ নজরদারি বাড়িয়েছে ঠিকই। কিন্তু অ্যাফ্লেক্স বাঁধ লাগোয়া গ্রামগুলিতে যারা আসছে তারা কারা? এই এলাকায় পাচার বন্ধ করা না গেলে এই প্রবণতা কমবে না।’’ ফরাক্কার অর্জুনপুর, সুতির ইমামবাজার, বাজিতপুর, জঙ্গিপুরের মহালদারপাড়া এলাকাতেও অচেনা মুখের আনাগোনা বাড়ছে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা থেকে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন