Recruitment Scam

চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ, সেই প্রধানের বাড়ির দখল নিলেন ‘প্রতারিতেরা’

স্বরূপনগরের কয়েক জন যুবক অভিযোগ করেছেন, ২০১৯ সালে চারঘাট পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান বাসন্তী বিশ্বাস ও তাঁর স্বামী নিখিলরঞ্জনকে কয়েক দফায় প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

স্বরূপনগর শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৩ ০৮:৩৭
Share:

প্রধানের বাড়ির একাংশ ইট গেঁথে দখল নিলেন প্রতারিতেরা। প্রতীকী ছবি।

পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে ন’জনের থেকে অন্তত আধ কোটি টাকা তুলেছেন। চাকরি মেলেনি। শেষে টাকা ফেরত না পেয়ে ‘প্রতারিতেরা’ প্রধানের বাড়ির একাংশ ইট গেঁথে দখল নিলেন বলে অভিযোগ উঠল। উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের চারঘাট পঞ্চায়েতের ঘটনা।

Advertisement

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য জুড়ে শোরগোল চলছে। মন্ত্রী এবং কয়েক জন নেতা এখন জেলে। তারই মাঝে স্বরূপনগরের কয়েক জন যুবক অভিযোগ করেছেন, ২০১৯ সালে চারঘাট পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান বাসন্তী বিশ্বাস ও তাঁর স্বামী নিখিলরঞ্জনকে কয়েক দফায় প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কেউ চাকরি পাননি বলেই তাঁদের দাবি। আরও অভিযোগ, একাধিক বার চেয়েও টাকা ফেরত মেলেনি।

ওই চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, কয়েক মাস আগে সালিশি সভায় প্রধান ও তাঁর স্বামী টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য পাঁচ মাস সময় চেয়ে নিয়েছিলেন। তার মধ্যে টাকা ফেরত দিতে না পারলে তাঁদের বাড়ির একাংশ এবং নিজেদের ছয় শতক জমি মহম্মদ মাজহার-সহ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীর নামে ছেড়ে দেবেন বলে তাঁরা লিখেও দেন, দাবি ওই চাকরিপ্রার্থীদের। কিন্তু পাঁচ মাস কেটে গেলেও টাকা ফেরত পাননি কেউ। অভিযোগ, ‘লিখিত চুক্তি’ মোতাবেক বৃহস্পতিবার দুপুরে মহম্মদ মাজহার আলি ও কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী মিলে এসে জমি-বাড়ির একটি অংশে ইট দিয়ে ঘিরে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। প্রধান ও তাঁর স্বামী ইতিমধ্যে এলাকা ছেড়েছেন। বাড়িতে কয়েক জন মহিলা ছিলেন। তাঁরা বাধা দিলেও মাজহারেরা কাজ চালিয়ে যান বলে দাবি।

Advertisement

জমি-বাড়ির একাংশ দখল নেওয়ার কথা অস্বীকার করছেন না মাজহার। তিনি বলেন, ‘‘চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছিলেন প্রধান আর তাঁর স্বামী। টাকা ফেরত দিতে না পারলে জমি-বাড়ির কিছু অংশ লিখে দিয়েছিলেন। তাই আমরা জমির একটি অংশে পাঁচিল তুলেছি।’’

পুলিশের কাছে যাচ্ছেন না কেন? মাজহারদের বক্তব্য, কয়েক মাস আগে অভিযোগ করা হয়েছিল থানায়। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। প্রধান ও তাঁর স্বামীকে এর আগে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছিল। কিন্তু ‘বিহিত চেয়ে’ এ ভাবে কারও অনুপস্থিতিতে বাড়ি-জমির দখল নেওয়া কি বেআইনি নয়? পুলিশ-প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জমি দখল করা হচ্ছে বলে মালিকের পক্ষ থেকে অভিযোগ আসেনি। আদৌ একে দখল বলা যাবে, না কি সত্যিই কাগজে-কলমে সম্পত্তি হস্তান্তর হয়েছিল, তা-ও স্পষ্ট নয়। ফলে এ ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ করা যাচ্ছে না। পঞ্চায়েত প্রধান বা তাঁর স্বামী লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রধানের স্বামীর দাবি, তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। তবে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি আব্দুল বারি সর্দার বলেন, ‘‘কারও কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়া অত্যন্ত অন্যায়। তদন্ত শুরু করেছি। দোষ প্রমাণ হলে ওঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন