ধকল কাটিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন চেতনা

বিপর্যয়ের ধকল সামলে নার্সিংহোমে চিকিৎসায় একটু সুস্থ বোধ করছেন চেতনা সাহু। শিলিগুড়ির সেবক রোড়ে যে নার্সিংহোমে তিনি রয়েছেন সেখানে তাঁর চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি থেকে প্লাস্টিক সার্জারির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পঙ্কজ ভরদ্বাজকে আনা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৬ ০২:২৯
Share:

শিলিগুড়ির নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন এভারেস্ট জয়ী চেতনা সাহু। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

বিপর্যয়ের ধকল সামলে নার্সিংহোমে চিকিৎসায় একটু সুস্থ বোধ করছেন চেতনা সাহু।

Advertisement

শিলিগুড়ির সেবক রোড়ে যে নার্সিংহোমে তিনি রয়েছেন সেখানে তাঁর চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি থেকে প্লাস্টিক সার্জারির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পঙ্কজ ভরদ্বাজকে আনা হয়েছিল। তিন দিন শিলিগুড়ি থেকে তিনি চেতনা সাহুকে দেখে গিয়েছেন। প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়েছেন। দরকার পড়লে তাঁকে খবর দিলেই তিনি ফের চলে আসবেন বলেও জানিয়েছেন। কোনও দরকার পরলে নার্সিংহোমের চিকিৎসকেরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে নিচ্ছেন।

এ দিন কিছুটা সুস্থ বোধ করেছেন চেতনা সাহু। এ দিন নার্সিংহোমে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ক্রাইম কনট্রোল অর্গানাইজেশনের রাজ্য শাখার সভাপতি রমেশ সাহু, সহসভাপতি বিপিন গুপ্তা, সম্পাদক লক্ষণ শর্মা। তাঁরা চেতনা সাহুকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

Advertisement

নার্সিংহোমের চিকিৎসক এ কে সিংহ জানিয়েছেন, চেতনা সাহু পুরোপুরি সুস্থ হতে সময় লাগবে। বিশেষ করে ফ্রস্ট বাইটে তাঁর হাতের আঙুলে যে ক্ষত হয়েছে তা ঠিক হতে দুই তিন মাস সময় লাগবে। চেতনার স্বামী প্রদীপবাবু নার্সিংহোমে সঙ্গেই রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আজ চেতনার শরীর অনেকটা ভাল মনে হচ্ছে। চিকিৎসকরা দেখছেন। আঙুলে যে জখম হয়েছে তা সারতে সময় লাগবে। শরীরের ধকল ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছে ও।’’

১৯ মে এভারেস্ট জয় করে ফেরার পথে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিলেন চেতনা। ফুরিয়ে এসেছিল অক্সিজেন। দলের থেকে পিছিয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাঁর স্বামী প্রদীপ সাহু এবং অপর অভিযাত্রী দেবরাজ দত্ত সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ক্যাম্প ফোরে ফিরে এলেও চেতনা ফিরতে পারেনি। ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন প্রদীপবাবু। অক্সিজেনের ঘাটতি পরায় নামতে কষ্ট হচ্ছিল চেতনার। তার উপর শারীরিক ধকল সহ্য হচ্ছিল না। তার জেরে ক্লান্ত চেতনা নামতে পারছিলেন না। নেপাল সরকারের পাঠানো উদ্ধারকারী দলের দুই শেরপাকে পান প্রদীপবাবু। তাঁদের দিয়ে অক্সিজেন পাঠান। শেষে তিন জনে গিয়ে চেতনাকে রাত দুটো নাগাদ ক্যাম্পে ফিরিয়ে আনেন। তখন গুরুতরভাবে বিধ্বস্ত চেতনা।

তুষারে দুই হাতের আঙুলে ক্ষত হয়েছে। শরীর চলছিল না তাঁর। তাঁকে নিয়ে পরদিন ক্যাম্প থ্রিতে নামেন প্রদীপবাবু। ২১ মে ক্যাম্প টু’তে। সেখান থেকে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করে বেস ক্যাম্প, লুকলা হয়ে কাঠমান্ডুতে আসেন। সেখান থেকে শিলিগুড়ি। প্রদীপবাবু বলছিলেন, ‘‘এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে জখম হওয়া, শরীরের অঙ্গ নষ্ট হওয়ার মতো মতো ঘটনা ঘটতেই পারে। তবে বিপদে পড়ে তা কাটিয়ে বেঁচে ফিরতে পারাটা ভগবানের আশীর্বাদ। ধৈর্য্য ধরতে হবে। ধীরে ধীরে ও সুস্থ হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন