একটি জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে সুগন্ধি সুপারি ও তামাকজাত মশলা বেচাকেনা নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। পশ্চিমবঙ্গেও ওই নির্দেশ কার্যকর করতে গত ৫ ডিসেম্বর রাজ্যের মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রকের প্রধান সচিব সি কে মিশ্র। অভিযোগ, সেই চিঠি মেলার পরেও রাজ্যের দোকানে দোকানে দেদার সুগন্ধি সুপারি ও তামাকজাত মশলা বিক্রি হচ্ছে। নাবালকেরাও সেগুলি কিনছে।
পড়শি রাজ্য বিহারে ওই নেশার জিনিস কেনাবেচার উপরে শুরু হয়েছে কড়া নজরদারি। মদ নিষিদ্ধ হয়েছে। এখন তামাকজাত মশলা বিক্রি করে ধরা পড়লে দিতে হয় জরিমানা। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ জারির পরে কর্নাটক ও মিজোরাম-সহ একাধিক রাজ্যেও তামাকজাত মশলা বিক্রি নিষিদ্ধ হয়েছে।
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) এক সদস্য জানান, ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে রাজ্যে গুটখা নিষিদ্ধ হয়েছে। তবে সুগন্ধি সুপারি ও তামাকজাত মশলা এখনও বিক্রি হচ্ছে। অনেকে ওই মশলার আলাদা আলাদা প্যাকেট কিনে এক সঙ্গে মিশিয়ে খাচ্ছেন। যা গুটখার মতোই ক্ষতিকারক। অথচ মুখের ক্যানসার কমাতে এই মশলার বিক্রি বন্ধ করতেই হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, অপ্রাপ্তবয়স্কদের তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করলে দোকানির সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়লে পণ্য বাজেয়াপ্ত হবে। আদালতে তুলতে হবে পুলিশকে। কিন্তু এ রাজ্যে সে সব কিছুই হয় না বলে অভিযোগ।
মুখ ও গলার ক্যানসারের চিকিৎসক সৌরভ দত্তের কথায়, ‘‘এই নির্দেশের সঙ্গে মানুষের স্বাস্থ্য জড়িয়ে আছে। আশা করি, প্রশাসন দ্রুত সক্রিয় হবে।’’ ক্যানসার-শল্য চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় মনে করেন, তামাকজাত পণ্য সংক্রান্ত যে কোনও আইন বা নির্দেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের মধ্যে একটা উদাসীনতা দেখা যায়। তাঁর মতে, ‘‘যত তাড়াতাড়ি এই অনীহা কাটবে, ততই মঙ্গল।’’ রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর অবশ্য দাবি, খাদ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।