কী গেরো, এখন মুখ্যমন্ত্রীই ভরসা

ক্লাস সেভেনের পড়ে আমার ছেলে উৎসব। ওর স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি শেষ হয়ে যাবে। তার আগেই ওর ইচ্ছেতেই দার্জিলিংয়ে আসা। আমি, আমার স্ত্রী ও ছেলে শুধু নয়। সঙ্গে এসেছে উৎসবের মাসি, মেসো এবং বছর তিনেকের মাসতুতো বোন সমৃদ্ধি।

Advertisement

দীপক মুখোপাধ্যায়, (পর্যটক, সিউড়ির বাসিন্দা)

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৭ ০২:০৭
Share:

‘এ বার একটা ঝামেলা না হয়ে থামবে না!’— পাহাড়ে ওঠা ইস্তক এমনই এক চাপা গুঞ্জন শুনছিলাম। বুধবার সন্ধ্যায় দেখলাম বেশ কিছু মোর্চা সমর্থক আমাদের হোটেলের সামনে দিয়ে মাশাল জ্বালিয়ে মিছিল করে গেল। তখনও ঠিক আঁচ করতে পারিনি কি হতে চলছে। টের পেলাম বৃহস্পতিবার। এখন একটাই চাওয়া যত দ্রুত সম্ভব দার্জিলিং ছাড়তে চাই।

Advertisement

ক্লাস সেভেনের পড়ে আমার ছেলে উৎসব। ওর স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি শেষ হয়ে যাবে। তার আগেই ওর ইচ্ছেতেই দার্জিলিংয়ে আসা। আমি, আমার স্ত্রী ও ছেলে শুধু নয়। সঙ্গে এসেছে উৎসবের মাসি, মেসো এবং বছর তিনেকের মাসতুতো বোন সমৃদ্ধি। পাহাড়ে ওঠার সময় রাস্তায় রাস্তায় বিশাল পুলিশ বাহিনী আর চাপা গুঞ্জন ছাড়া কিছু বুঝিনি। আগেও দার্জিলিং বেড়াতে এসেছি। কখনও কোনও সমস্যা হয়নি। এমনকী বৃহস্পতিবার সকালেও না।

ভোর ভোর টাইগার হিল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন সেরে বেলা সাড়ে ন’টায় হোটেলে ফিরেই প্রথম ঝটকা লাগল। এ দিনই এনজিপি আমাদের কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে ফেরার কথা। বেলা সাড়ে এগারোটায় যে গাড়িতে হোটেল ছাড়ার কথা সেই গাড়িই প্রথম খারাপ খবরটা দিল। জানাল, যেতে পারব না। সব রাস্তা বন্ধ। মোর্চার বিক্ষোভ হবে। তারপরই বিকেলের ভয়াবহ ঘটানা। বিক্ষোভ, আগুন, লাঠি-কাঁদানে গ্যাস। আমাদের হোটেলের সামনে কিছু না হলেও, এটুকু বুঝেছি কতটা মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে গোটা দার্জিলিংয়ে। পুলিশ, সেনায় মুড়ে ফেলেছে গোটা তল্লাট। চারিদিক থমথমে। একটা দোকানপাঠও খোলা নেই।

Advertisement

শুক্রবার সকালে বেরিয়ে দেখলাম পরিস্থিতি কিছুমাত্র বদলায়নি। আগে পছন্দের খাবার কিনে খাচ্ছিলাম। এখন ঢেড় বেশি খরচ করে সব কিছু হোটেল থেকেই কিনছি। আমাদের হোটেলে এখনও না হলেও শুনছি আশপাশের হোটেলে জলকষ্ট শুরু হয়ে গিয়েছে।

এ সবের মাঝেও একটাই সান্ত্বনা। খোদ মুখ্যমন্ত্রী এখনও পাহাড়েই রয়েছেন। আশা করি, তিনি সকলকেই নিরাপদে বাড়ি পৌঁছনোর জন্য সব ব্যবস্থা নেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন