‘কেন্দ্রের কাজ রাজ্যকে সাহায্য করা, আগুন জ্বালানো নয়’, কেন্দ্রের সঙ্গে আরও সংঘাতে মমতা

কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ‘বঞ্চনা’ ও ‘মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগ নতুন নয়। তবে রাজ্যের প্রতি দিল্লির এই ‘বিমাতৃসুলভ’ আচরণের পাল্টা হিসাবে বৃহস্পতিবার নামখানার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী যে অবস্থান নিয়েছিলেন, তাতে অসহযোগিতার হুমকি স্পষ্ট।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৩
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

দিল্লির সঙ্গে সংঘাত আরও তীব্র করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যৌথ ও একক তালিকা বদল করে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকা বিষয়গুলি ‘ছাঁটা’র কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সাগরে এক কর্মসূচিতে তিনি বলেন, ‘‘বিদেশ, অর্থ এবং প্রতিরক্ষা দফতরই কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকা উচিত।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রের কাজ রাজ্যকে সাহায্য করা। রাজ্যে আগুন জ্বালানো নয়।’’

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ‘বঞ্চনা’ ও ‘মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগ নতুন নয়। তবে রাজ্যের প্রতি দিল্লির এই ‘বিমাতৃসুলভ’ আচরণের পাল্টা হিসাবে বৃহস্পতিবার নামখানার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী যে অবস্থান নিয়েছিলেন, তাতে অসহযোগিতার হুমকি স্পষ্ট। ওই সভায় রাজ্য সরকারের সর্বোচ্চ স্তরের আমলাদের তিনি কেন্দ্রকে কোনও তথ্য'-পরিসংখ্যান না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। একই মেজাজে এ দিন সাগরের সভায় তিনি বলেন, ‘‘চিন, আমেরিকা, রাশিয়া, পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কী হবে, সেটা দেখুক কেন্দ্র। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আছে, অর্থ দেখুক। আর প্রতিরক্ষা। ওদের এই তিনটি দফতরই দেখা উচিত।’’

এ রাজ্যে সাড়ে তিন দশকের শাসনের একটি বড় সময় দিল্লির সঙ্গে এই বিরোধ হয়েছে বামেদের। বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের কনক্লেভ থেকেও রাজ্যের হাতে অধিক ক্ষমতার দাবি জানানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলি পুনর্বিন্যাসের দাবি উঠত। সেই ধারাবাহিকতা মমতা জমানায় আরও তীব্র চেহারা নিয়েছে। যেখানে তিনি কেন্দ্রকে রাজ্যের তরফে কোনও তথ্য দিতেও নারাজ। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে। বাংলাকে ওরা গরিব করে রাখতে চায়। রাজ্যের অবস্থা ছাগলের তৃতীয় সন্তানের মতো করে রেখেছে।’’ এ কথার খেই ধরেই তাঁর অভিযোগ, গঙ্গাসাগর মেলার উন্নয়নেও কেন্দ্র কোনও সাহায্য করেনি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: লক্ষ্মণ-বার্তায় ‘না’, দাবি উঠল কংগ্রেসে

তারপরই রাজ্য সরকারের এক্তিয়ার বৃদ্ধির দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য, শিক্ষা,খাদ্য, কৃষি, আইনশৃঙ্খলা দেখবে, চাকরি দেবে রাজ্য। আর তুমি (কেন্দ্র) দাদাগিরি করবে!’’

কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে এ দিন নাম না করে বিজেপি’কেও এক হাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনের মঞ্চে তাঁর সঙ্গে ছিলেন কপিল মুনির আশ্রমের প্রধান মহন্ত জ্ঞানদাস, রামকৃষ্ণ মিশনের সত্যপ্রিয় রঞ্জন মহারাজ, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের গঙ্গাসাগরের প্রধান নিমাই মহারাজ, ইসকনের প্রতিনিধি গোবিন্দ দাস এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মৌলানা সৈয়দ কায়ুম। সুন্দরবন কাপের পুরস্কার প্রদান করেন তাঁরা। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা সব ধর্মকে সম্মান করি। সে জন্যই এখানে সমস্ত ধর্মের বিশিষ্ট মানুষেরা পুরস্কার প্রদান করলেন। আমরা সব ধর্মের মানুষকে ভালবাসি।’’

এ দিন বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচিরও সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘জগন্নাথের রথযাত্রা হয়। কিন্তু এই রথযাত্রা দাঙ্গার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement