Mamata Banerjee

বাংলায় মাহাতো জনসংখ্যা কত? গণনা রাজ্যে, ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি কেন্দ্রের হাতেই: মুখ্যমন্ত্রী

মাহাতোদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে সমীক্ষা করার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকেই তাঁর এই পদক্ষেপের সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জাত গণনার সঙ্গে মিল পাচ্ছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:২৫
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী মাহাতোরা তাঁদের তফসিলি জনজাতি হিসেবে ঘোষণা দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘ দিন। তাঁদের সেই দাবিকে মান্যতা নিয়ে রাজ্যে ভৌগোলিক ভাবে তাঁদের সংখ্যা জানতে একটি সমীক্ষা করার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার শিমুলিয়া ময়দানে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানেই মাহাতোদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে সমীক্ষা করার কথা জানান মমতা। তবে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মাহাতোদের তফসিলি জনজাতি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার এক্তিয়ার রাজ্যের নেই। তা রয়েছে কেন্দ্রের হাতেই। বাংলার রাজনৈতিক মহলের একাংশ মমতার এই পদক্ষেপের সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জাত গণনার সঙ্গে মিল পাচ্ছেন।

Advertisement

মমতা বলেন, ‘‘আমি মাহাতোদের একটা কথা বলব, আদিবাসী ও মাহাতোদের মধ্যে আমি ঝগড়া লাগাতে চাই না। আপনাদের যা যা আছে আমরা করে দেব। সঙ্গে সঙ্গে মাহাতোদের দীর্ঘ দিনের দাবি আছে, তাদের তফসিলি জনজাতি হিসাবে ঘোষণা করা হোক। এটা আমার হাতে নেই। কাজেই আপনারা আমাকে দোষ দেবেন না। কিন্তু আমরা মনে করি আমরা শুরু করেছি। কোন কোন জিয়োগ্রাফিক অঞ্চলে মাহাতরা থাকেন। তাদের একটা পার্সেন্টেজ, একচুয়াল পার্সেন্টেজ তাদের জন্য একটা সার্ভে করছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যেমন আদিবাসীদের পার্সেন্টেজ এখানে ৬ শতাংশ রয়েছে। আদিবাসীদের কাস্ট সার্টিফিকেট নিয়ে যেন কোনও সমস্যা না হয়। সেটাও আমাদের দেখতে হবে। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে, আদিবাসী ভাইবোনেরা তা জানাবেন। মাহাত ভাইবোনেরা আপনাদের যা সমস্যা আমি দেখে দেব। আপনাদের যে দাবি তা আমি দেখে দেব। কিন্তু দয়া করে ভোট এলেই আদিবাসী আর মাহাতোদের মধ্যে ঝগড়া লাগাবেন না। কারণ অনেক মাহাতোও আদিবাসী আছেন।’’

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে পুরুলিয়া আসনটি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি। সে কথা স্মরণ করিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আগের বারও এখান থেকে বিজেপি জিতে গিয়েছিল। জিতে যাওয়ার পরে কি কিছু করেছিল? ইলেকশনের আগে এসে ভয় দেখাবে। কিছু টাকা পয়সা দেবে। আর কিছু মিথ্যে নোংরা নোংরা কথা বলবে। আপনারা শুনবেন না। ভোট হয়ে গেলেই ওরা পালিয়ে যাবে। আমরা কিন্তু বাংলায় ৩৬৫ দিনই থাকব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভোটের সময় ওরা এসে বলবে ১৫ লক্ষ টাকা দেবে। কিন্তু ভোট চলে গেলে ওরা আর কিছু করবে না। ওদের সঙ্গেই মিশে আছে সিপিএম আর কংগ্রেস। ওরা বড় বড় কথা বলে, কিন্তু কেউ কোনও কাজ করে না। আমি কথা দিলে কথা রাখি।’’

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্র সরকার ৪৫৫টা টিম পাঠিয়েছে। রোজ আগুন লাগায়। দাঙ্গা লাগায়। তারপর বলে কে করল? কোথাও গন্ডগোল হয় না। শুধু বিজেপির পঞ্চায়েতে গন্ডগোল হয়, কারণ কী? তার কারণ ওরা লুটে খায়। আর মানুষকে ধরে ঠেঙায়।’’ এর পর নিজের দলের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি প্রত্যেককে বলব, একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করবে। মনে রাখবেন আমরা সবাই ছোট, মানুষ বড়। তারাই এখানে নিয়ে এসেছেন। মানুষ যেদিন ছুড়ে ফেলে দেবে সেদিন কেউ তাকিয়েও দেখবে না। কেউ পুছেও দেখবে না আমি বড় না ও বড়। আমি চিরকাল এই কথা বিশ্বাস করি। এই কথা বিশ্বাস করলে আমার সঙ্গে থাকুন। নয়ত অন্য দল করুন। আমার আপত্তি নেই। তৃণমূল করলে মানুষকে বঞ্চনা করা যাবে না।’’

আদিবাসী সম্প্রদায়ের একাংশের দাবির কথা স্মরণ করে মমতা বলেছেন, ‘‘সারি এবং সারনা ধর্মের স্বীকৃতির দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছি। যদি তারা না করে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব সারি এবং সারনা ধর্মকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন