মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী ভাবে বাড়ানো যায়, তার রূপরেখা তৈরিতে তিন সদস্যের কমিটি গড়ছে রাজ্য। মেডিক্যাল কলেজ থেকে শিশু চুরির মতো ঘটনা ঘটার পরেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বরাষ্ট্রসচিব মলয় দে, স্বাস্থ্যসচিব রাজেন্দ্র শুক্ল, স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী, রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পরে ডিজি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী ভাবে আরও বাড়ানো যায় তার রূপরেখা তৈরির জন্য স্বাস্থ্যসচিব, ডিজি এবং পুলিশ কমিশনারকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গড়ে তোলা হচ্ছে। সব মেডিক্যাল কলেজে তো বটেই, একেবারে ব্লক পর্যায়েও সব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে আরও বেশি সিসিটিভি লাগানো হবে।’’ তিনি জানান, শিশু চুরি নিয়ে সিআইডি তদন্ত করছে। কয়েক জন ধরাও প়়ড়েছে।
মেডিক্যাল কলেজ ভাঙচুর এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে পথ অবরোধ প্রসঙ্গে এ দিন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, ‘‘একটি ঘটনার জেরে তৈরি হওয়া আবেগকে সামনে রেখে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। কোনও অভিযোগ থাকলে পুলিশকে বলুন।’’
আরও খবর
‘ছোঁক ছোঁক করছিল লোকটা, বাড়ি ফিরে দেখি জিন্সে বীর্যের দাগ’
অন্য দিকে, মঙ্গলবার দিনভর ধকলের পরে কিছুটা নেতিয়ে পড়েছিল চুরি যাওয়া শিশুটি। তাই রাতেই তাকে সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়। তার আগে অবশ্য ছেলেকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন মা সরস্বতী। বুধবার সকালে তিনি জানান, সন্তানকে নিয়ে নার্সরা চলে যাওয়ার পরে সারা রাত ঘুমোতে পারেননি তিনি। বার বার অনুরোধ করেছিলেন, ছেলেকে যেন তাঁর কাছেই থাকতে দেওয়া হয়। কিন্তু ডাক্তার ও নার্সরা জানিয়ে দেন, এই মুহূর্তে সেটা সম্ভব নয়। শিশুটির স্বাস্থ্যের কারণেই তাকে বিশেষ তত্ত্বাবধানে রাখা জরুরি।
এ দিনও কয়েক দফায় এসএনসিইউ-এ গিয়েই সন্তানকে দুধ খাইয়ে এসেছেন সরস্বতী। তাঁর শাশুড়ি রূপা নস্কর বলেন, ‘‘আমার বৌমা সব সময়ে ছটফট করছে। খুব আতঙ্কে রয়েছে ও। বাচ্চাটাকে নিয়ে ভালয় ভালয় বাড়ি ফিরতে পারলে বাঁচি।’’
কবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে ওঁদের? সে সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ কিছু জানাননি। তবে ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে তো সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগে। তত দিন কি মা ও শিশুকে হাসপাতালেই রাখা হবে? এর উত্তরেও চুপ করেই থেকেছেন হাসপাতাল সুপার শিখা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, ‘‘ওই সন্তান যে সরস্বতী নস্করেরই সে বিষয়ে আমাদের কারওরই কোনও সংশয় নেই। কিন্তু তবুও আইনের খাতিরেই পরীক্ষা হয়েছে। সন্তান পুরোপুরি সুস্থ হলে মায়ের কাছেই থাকবে। এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই।’’