Subrata Mukherjee

Subrata Mukherjee death: দেশের জোড়া মণ্ডা প্রিয় ছিল ‘সন্তু’র

বছর দু’য়েক আগেও গ্রামে দু’কামরার খড়ের চাল দেওয়া বাড়ি ছিল সুব্রতদের। বর্তমানে জমিটাই পড়ে। কিছু চাষজমি রয়েছে তাঁদের নামে।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য ও সৌমেন দত্ত

পূর্বস্থলী ও মেমারি শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২১ ০৫:১৬
Share:

পূর্বস্থলীর ন’পাড়ায় এখানেই পৈতৃক বাড়ি ছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল।

চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময়েই বাপ-ঠাকুরদার ভিটে ছেড়ে চলে গিয়েছিল পরিবার। তবে ‘টান’ কাটেনি। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর ন’পাড়া গ্রামের পৈতৃক ভিটেই হোক বা মেমারির মণ্ডলগ্রামের মামারবাড়ি, বছরে এক বার অন্তত যাওয়ার চেষ্টা করতেন সদ্য প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

তাঁর ছেলেবেলার বন্ধু, ন’পাড়ার তিনকড়ি বৈরাগ্য, সামসুল শেখরা বলেন, ‘‘গ্রামে এলেই গল্পের আসর বসাত সন্তু (সুব্রতবাবুর ডাকনাম)। কাদায় পড়ে যাওয়া, হাডুডু খেলার কথা বলতে বলতে হেসে ফেলত। আর নাদনঘাটের জোড়া মণ্ডা ছিল ওর প্রিয়। এলেই মণ্ডা খেতে চাইত।’’

Advertisement

বছর দু’য়েক আগেও গ্রামে দু’কামরার খড়ের চাল দেওয়া বাড়ি ছিল সুব্রতদের। বর্তমানে জমিটাই পড়ে। কিছু চাষজমি রয়েছে তাঁদের নামে। প্রতিবেশীরা জানান, সুব্রতর এক জেঠতুতো দাদা ওই বাড়িতে থাকতেন। বছর তিনেক আগে তিনি মারা যাওয়ার পর থেকে ঘর ফাঁকা। এ দিন সে জমিতে সুব্রতর স্মৃতিতে মালা দেন তাঁর বন্ধুরা, গ্রামের অনেকে।

স্থানীরা জানান, সুব্রতর বাবা অশোককুমার মুখোপাধ্যায় স্থানীয় উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। ঠিকানা বদল হলেও গ্রামকে ভোলেননি, গ্রামে এলেই সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিতেন ‘সন্তু’। জলকষ্টের কথা শুনে তিনি জনস্বাস্থ্য কারিগরি প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তার মোড়ে নলবাহিত জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। ন’পাড়া মোড় থেকে খেয়াঘাট পর্যন্ত ঢালাই রাস্তা, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন হয় তাঁর উদ্যোগে।

Advertisement

ফি বছর বৈশাখে রক্ষাকালী পুজোয় মেমারির মণ্ডল গ্রামে মামারবাড়িতেও যেতেন সুব্রত। নাড়ু খাওয়া, সাঁতার কাটার স্মৃতি রয়েছে তাঁর সমবয়সীদের মনে। ২০২০-এর ২ ফেব্রুয়ারি মা সাবিত্রী মুখোপাধ্যায়ের আবক্ষ মূর্তির উদ্বোধন করতে শেষ বার মেমারিতে গিয়েছিলেন তিনি। এ দিন প্রয়াত মন্ত্রীর এক ভাইপো সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, ‘‘গ্রামে একটি হাসপাতাল করতে চেয়েছিলেন। প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু স্বপ্নপূরণ হল না!’’ ন’পাড়ার বাসিন্দা সনৎ ঘরুই, রবীন্দ্রনাথ কর্মকারেরাও বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ অসুবিধায় পড়লেই সাহায্য করতেন। গ্রামের কেউ কলকাতায় ওঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেই জিজ্ঞাসা করতেন, ‘মণ্ডা এনেছিস’? যে মানুষটার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার কথা, তিনি কী ভাবে সব মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন