এইচআইভির তালিকায় কমবয়সীরাও

২০১০ সালে অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৪০। সাত বছরে তা প্রায় পাঁচ গুণ বেড়ে ২০১৭ সালে হয়েছে ২,৮৬৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মা-শিশুর সংখ্যা প্রায় ৩৫।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩০
Share:

ঘটা করেই বিশ্ব এড্‌স পালিত হয়েছে শুক্রবার। সচেতনতা বাড়াতে গোটা রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে হয়েছে নানা কর্মসূচি। এবং পরিসংখ্যান বলছে, পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগের। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে গত সাত বছরে নতুন করে প্রায় ২,২২৮ জন এইচআইভি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। সংক্রমিতদের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশের বয়স ১৫ বছর বা তারও কম হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, বছরভর প্রচারের পরেও তাহলে কি সচেতনতায় খামতি থেকে যাচ্ছে!

Advertisement

২০১০ সালে অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৪০। সাত বছরে তা প্রায় পাঁচ গুণ বেড়ে ২০১৭ সালে হয়েছে ২,৮৬৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মা-শিশুর সংখ্যা প্রায় ৩৫। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলছিলেন, “আক্রান্তদের মধ্যে কিশোর-কিশোরীর সংখ্যাও যথেষ্ট বেশি। এক সময় দেখা গিয়েছিল একটি সেন্টারে চিকিৎসাধীন ২,৪৮৯জনের মধ্যে ২৬৬ জনেরই বয়স ১৫ বছর বা তার কম।’’ সম্প্রতি ঘাটাল মহকুমার একটি এলাকায় এইচআইভি শনাক্তকরণ শিবিরে ৩ সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছে। গোপনে চিকিত্সাও শুরু হয়েছে।

রাশ নেই রোগে

Advertisement

বছর

এইচআইভি আক্রান্ত

২০১৩

১,৩৫৪

২০১৪

১,৬২৩

২০১৫

২,১৮১

২০১৬

২,২৩২

২০১৭

২,৮৬৮

(অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের পরিসংখ্যান)

এত প্রচারের পরেও সংক্রমিত বাড়ছে কেন? জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার যুক্তি, আগের তুলনায় এইচআইভি শনাক্তকরণ শিবির বেড়েছে। প্রত্যন্ত এলাকাতেও শিবির হচ্ছে। ফলে নতুন সংক্রমিতের খোঁজ মিলছে। ওই স্বাস্থ্যকর্তার সংযোজন, জেলার ঘাটাল, দাসপুর ১ ও ২-এর মতো যে সব ব্লকে বহু মানুষ ভিন্‌ রাজ্যে কাজে যান, সেখানেই এইচআইভির বাহক হয়ে ফিরে আসার প্রবণতা বেশি। জেলায় ঘাটাল মহকুমায় তাই এড্‌স আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি।

সমাজ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয়ে অনেক এইচআইভি আক্রান্তই রোগ আড়ালের চেষ্টা করেন। অনেক এড্‌স আক্রান্তকে সমাজে একঘরে করে রাখার অভিযোগও ওঠে। এড্‌স নিয়ে ভুল ধারণা ভাঙাতে আরও সচেতনতা বাড়ানোর উপরেই জোর দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। ‘স্বচ্ছতা-দায়বদ্ধতা-অংশগ্রহণ, প্রতিরোধ করতে পারে এইচআইভি সংক্রমণ।’— এই বার্তা নিয়ে শুক্রবার বিশ্ব এড্‌স দিবসেও জেলা জুড়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘আক্রান্তদের গোপনে কাউন্সেলিং করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এতে উদ্বেগের কিছু নেই।’’ উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও এড্‌সের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলছেন, “সচেতনতা বাড়াতে জেলা জুড়ে নানা কর্মসূচি হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন