দাবি ছিটমহলের বাসিন্দাদের

জনগণনার ভিত্তিতে পুনর্বাসন দাবি

বিনিময় প্রক্রিয়া হলে দুই দেশের ২০১১ সালের যৌথ জনগণনায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ছিটমহলের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত করার দাবি উঠল। সোমবার ওই দাবিতে এ রাজ্যের কোচবিহারের পাশাপাশি বাংলাদেশের চার জেলায় একযোগে আন্দোলনে নামেন ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি। ওই দাবির ব্যাপারে কোচবিহার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে স্মারকলিপি দিয়ে আর্জি জানান হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৫ ০৩:২৬
Share:

কোচবিহারে মিছিল কমিটির। —নিজস্ব চিত্র।

বিনিময় প্রক্রিয়া হলে দুই দেশের ২০১১ সালের যৌথ জনগণনায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ছিটমহলের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত করার দাবি উঠল। সোমবার ওই দাবিতে এ রাজ্যের কোচবিহারের পাশাপাশি বাংলাদেশের চার জেলায় একযোগে আন্দোলনে নামেন ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি। ওই দাবির ব্যাপারে কোচবিহার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে স্মারকলিপি দিয়ে আর্জি জানান হয়।

Advertisement

দুপুরে কমিটির সদস্য-সমর্থকরা বিশাল মিছিল করে কোচবিহার শহর পরিক্রমা করেন। কোচবিহার জেলাশাসকের দফতর লাগোয়া চত্বরে পথসভাও করা হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম, নীলফামারি ও পঞ্চগড় জেলার জেলাশাসকদের দফতরের সামনে জমায়েত করে সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন,“ কমিটির দাবিপত্র পেয়েছি। আলোচনা হয়েছে। সুযোগ হলে বিষয়গুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।”

ওই কমিটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, দুই দেশের সীমানা ঘেরা মোট ১৬২ টি ছিটমহল রয়েছে। তারমধ্যে ভারতীয় ছিটমহলের সংখ্যা ১১১টি। বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছ। ২০১১ সালে দুই দেশের সরকারের উদ্যোগে যৌথ কমিটি তৈরি করে সেখানকার বাসিন্দাদের ‘হেড কাউন্ট’ করা হয়। ওই যৌথ গণনা অনুয়ায়ী সেখানকার জনসংখ্যা ৫১,৫৮৪ জন। ৩৭,৩৬৯ জন ভারতীয় ও ১৪,২১৫ জন বাংলাদেশের ছিটমহলের বাসিন্দা। সংসদের দুই কক্ষে ছিটমহল বিনিময় সংক্রান্ত স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল অনুমোদন হয়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে ওই সব ছিটমহল বিনিময় প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের মুখে।

Advertisement

ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহকারি সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “ সংসদে ছিটমহলের জনসংখ্যার পরিসংখ্যান সংক্রান্ত ওই তথ্য জমা পড়েছে। অথচ সম্প্রতি ছিটমহল বিনিময়ের সম্ভাবনা দেখে কিছু সুবিধাভোগী লোক ওই তালিকার বিরোধিতা করছে। এমনকি কয়েকটি ছিটমহলে বহিরাগতরা পুনর্বাসনের সুবিধে নিতে তৎপর হয়ে উঠেছে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে। সবকিছু ভেবেই ওই দাবি জানানো হয়েছে। ঠিকানা বদলে আগ্রহীদের পুলিশ রিপোর্ট বিশদে খতিয়ে দেখা দরকার বলেও রাজ্য সরকার ও দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে আর্জি জানানো হচ্ছে।” এদিন কোচবিহারের পথসভায় দীপ্তিমানবাবু অভিযোগ করেন, ছিটমহল সমস্যার সমাধান অন্তত ২৩ বছর আগে হতে পারত। একাংশের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে তা হয়নি। দু’ দেশের ছিটের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের সময়সীমা বেড়েছে।

কমিটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, দুই দেশের ছিটমহলের ৭৫০ জন বাসিন্দা ঠিকানা বদল করতে পারেন বলে তারা সমীক্ষা করে দেখেছেন। ইদানীং ২০১১ সালের জনগণনা তালিকার বাইরে থাকা কিছু অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকায় অভিযুক্ত কিছু মানুষও ওই সুযোগ নিয়ে ঠিকানা বদলাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। দিনহাটা, পাটগ্রাম, কুড়িগ্রাম, হাতিবান্ধা থানায় অপরাধমূলক কাজে অন্তত ন’জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করা রয়েছে। জনগণনার তালিকার বাইরে থাকা বাসিন্দাদের বাসস্থান বদলের অনুমতি না দেওয়া, কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দায়িত্ব না দিয়ে সরাসরি প্রশাসনের মাধ্যমে উন্নয়নের কাজের দাবিও তুলেছেন কমিটির কর্তারা। আজ মঙ্গলবার ওই দাবির ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পাঠাচ্ছে কমিটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন