প্রয়াত চিত্রা দেব

চিত্রা দেবকে প্রথম খ্যাতি এনে দেয় ‘ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল’। যে বইয়ের প্রকাশকাল ১৯৮০।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৪
Share:

লেখক-গবেষক চিত্রা দেব দীর্ঘ রোগভোগের পর মারা গেলেন। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। সোমবার তাঁর মৃত্যু হয় টালিগঞ্জের এম আর বাঙুর হাসপাতালে। ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে ওখানে ভর্তি করানো হয়।

Advertisement

অবিবাহিত চিত্রা দেবী থাকতেন রানিকুঠির রিজেন্ট পার্ক সরকারি আবাসনে। গত এক যুগ ধরে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। সেই অবস্থাতেই লেখেন ‘ঠাকুরবাড়ির বাহিরমহল’। দ্বারকানাথ ঠাকুরের ‘বেলগাছিয়া ভিলা’ কেনা, সেখানে দেশ-বিদেশের গণ্যমান্যদের আমন্ত্রণ করে উৎসবের আয়োজন কিংবা পাথুরিয়াঘাটায় যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরের ‘প্রাসাদ’ ও তাঁর বাগানবাড়ি ‘মরকত কুঞ্জ’-র কথা ও এই সব বাড়ির মানুষদের বিষয়ে বলা আছে গত বছর প্রকাশিত ওই বইয়ে। যে সব তথ্য আসলে বাঙালির আধুনিক হয়ে ওঠার ইতিহাসের অংশ।

তবে চিত্রা দেবকে প্রথম খ্যাতি এনে দেয় ‘ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল’। যে বইয়ের প্রকাশকাল ১৯৮০। ডান দিকের বদলে বাঁ দিকে আঁচল রেখে ও কুঁচি দিয়ে শাড়ি পরা তখনকার বোম্বাই থেকে শিখে কলকাতায় যিনি চালু করেছিলেন, তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেজো বউদি। সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী জ্ঞানদানন্দিনী। গভীর গবেষণায় ঠাকুরবাড়ির ভিতরকার এই ধরনের বহু তথ্য বার করে ওই বই লেখেন চিত্রা দেবী।

Advertisement

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম এ চিত্রা দেবের পিএইচ ডি-র বিষয় ছিল মল্লরাজ সভাকবি শঙ্কর কবিচন্দ্রের মহাভারত। জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৪ নভেম্বর, বিহারের পূর্ণিয়ায়। স্কুলের পড়াশোনা বিহারেই, উচ্চশিক্ষা কলকাতায়। কর্মজীবনে আনন্দবাজার সংস্থার গ্রন্থাগারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেটা ১৯৮০ থেকে ২০০৪ সাল। তখন ‘দেশ’ পত্রিকার নির্দেশিকা প্রস্তুত করেছেন তিনি।

‘অন্তঃপুরের আত্মকথা’, ‘মহিলা ডাক্তার: ভিনগ্রহের বাসিন্দা’-র মতো গবেষণাধর্মী বই লেখা ছাড়াও চিত্রা দেব সম্পাদনা করেছেন সরলাবালা সরকারের রচনাসমগ্র, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস সমগ্র, বিষ্ণুপুরী রামায়ণ। অনুবাদ করেছেন প্রেমচন্দের একাধিক উপন্যাস, শ্রীরঙ্গের আদি অনন্ত।

কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার পরে চিত্রা দেব এক জটিল স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হন। প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁর আত্মীয়েরা জানাচ্ছেন, ওই কষ্ট প্রশমনের জন্য একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তারই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় চিত্রা দেবীর কোমর থেকে নিম্নাঙ্গ অসাড় হয়ে যায়। কিন্তু স্বাভাবিক চলাফেরা বন্ধ হয়ে গেলেও এই ক’বছর চিত্রা দেবের কলম থামেনি। এ বার সেটাও থেমে গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন