পছন্দসই মিশ্র পাঠে হাজিরায় ফাঁকি নয়: পার্থ

এ বার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ‘চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’ (সিবিসিএস) বা পছন্দসই মিশ্র পাঠ ব্যবস্থা সফল করার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গরহাজির থাকার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে বলে সরাসরি জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০৪:১৪
Share:

শিক্ষার সর্বস্তরে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরায় বিশেষ নজর দেওয়ার কথা তিনি বারবার বলেছেন। এ বার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ‘চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’ (সিবিসিএস) বা পছন্দসই মিশ্র পাঠ ব্যবস্থা সফল করার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গরহাজির থাকার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে বলে সরাসরি জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

মঙ্গলবার বিকাশ ভবনে উচ্চশিক্ষা সংসদের বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যেরা। সেই বৈঠকের পরে পার্থবাবু হাজিরা নিয়ে ফের সতর্ক করে দেন। শিক্ষামন্ত্রী জানান, ২০১৮-’১৯ শিক্ষাবর্ষে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সিবিসিএস চালু করতে হবে। তার আগে ভাল রকমের প্রচার দরকার। সেই সঙ্গেই উঠে আসে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের হাজিরার বিষয়টি। শিক্ষামন্ত্রী বৈঠকের পরে বলেন, ‘‘হাজিরার উপরে জোর দিয়েছি। এই বিষয়ে আলাপ-আলোচনার কথা বলেছি। কারণ উৎকর্ষ নির্ভর করে নিয়মিত ক্লাসের উপরে।’’ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি কমানোর প্রসঙ্গও ওঠে এ দিন। শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘লিভ রুল’ বা ছুটির নিয়মবিধি খতিয়ে দেখতে বলেন। তিনি জানান, এই বিষয়ে ‘কমন রুল’ বা সকলের জন্য একটি সাধারণ নিয়মবিধি থাকলে ভাল হয়। রাজ্য সরকার ২০১৩ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে একটি ‘মডেল স্ট্যাটিউট’ বা আদর্শ বিধিনিয়ম তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু সেটি এখনও তৈরি হয়নি বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

গত অগস্টে উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকেও সিবিসিএস চালু করার উপরে গুরুত্ব দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় কলা, বাণিজ্য, বিজ্ঞান বিভাগে একসঙ্গে পছন্দসই মিশ্র পাঠ চালু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন। মন্ত্রী জানান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮-’১৯ শিক্ষাবর্ষেই সব বিভাগে সিবিসিএস চালু করবে বলে সোনালিদেবী এ দিনের বৈঠকে জানিয়েছেন।

Advertisement

এ দিন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের উপরে জোর দেন পার্থবাবু। তিনি উপাচার্যদের জানান, বারবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কলেজ সার্ভিস কমিশন (সিএসসি)-কে শূন্য পদের তালিকা দেওয়া হচ্ছে না। কয়েকটি ক্ষেত্রে সংরক্ষিত আসন ফাঁকা বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ স্বশাসন পাওয়ার বিষয়টিও বৈঠকে ওঠে। শিক্ষা সূত্রের খবর, অন্য এক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য একটি নামী বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যাদবপুরের তুলনা করেন। শিক্ষামন্ত্রী তখন বলেন, ‘‘যাদবপুর বিক্ষোভ দেখাতে তো এক নম্বরে!’’ স্পষ্টই তাঁর কটাক্ষের লক্ষ্য যাদবপুরের পড়ুয়ারা। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘এই স্বশাসন পেলে কেন্দ্র নাকি আর্থিক সাহায্য করবে। আগে করুক! কেন্দ্র তো শিক্ষায় আমাদের প্রাপ্য টাকারই ৩০ শতাংশের বেশি দেয় না।’’

শিক্ষামন্ত্রী সব বিশ্ববিদ্যালয়কেই ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল বা নাক-এর মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেন। নাক-এর মূল্যায়নে নির্দিষ্ট নম্বর না-পেলে দূরশিক্ষা চালানো যাবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। এই বিষয়ে বর্ধমান, কল্যাণী এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়কে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানাতে বলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের জন্য ই-পেনশনের ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন। এই প্রক্রিয়া চালু হবে ২ এপ্রিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন