Oppenheimer

পর্দায় হলিউড, চর্চায় বাংলা বইও

বস্তুত জুন-জুলাই থেকে‌ই ফেসবুকের বইপডু়য়াদের নানা গ্রুপে একাধিক আলোচনায় উঠে আসছে ‘বিশ্বাসঘাতক’-এর কথা। চলছে বই আর ছবির তুলনামূলক চুলচেরা বিশ্লেষণ।

Advertisement

শ্রেয়া ঠাকুর

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৩ ০৭:৫৬
Share:

ওপেনহাইমার ছবির পোস্টার। —ফাইল চিত্র।

‘যাক, নোলান এসে বিশ্বাসঘাতকের স্মৃতি টাটকা করে দিলেন!’ সমাজমাধ্যমে বইপড়ুয়াদের মধ্যে কান পাতলে এই জাতীয় কথা এই মুহূর্তে শোনা যাচ্ছে প্রায়ই। গত ২১ জুলাই রিলিজ় করেছে হলিউডের নামী পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলানের বহুচর্চিত ‘ওপেনহাইমার’ ছবিটি। তাকে ঘিরে নানা রকম চর্চার মধ্যেই আলাপ-আলোচনায় ফিরে আসছে বাঙালির ‘বিশ্বাসঘাতক’-প্রীতি। নারায়ণ সান্যালের বহুপঠিত এই বই ঘিরে নতুন করে আলোচনা আবার তুঙ্গে। কলেজ স্ট্রিটের একাধিক বিপণিতে বইটি ফের সামনের সারিতে। সেই সঙ্গে আলোচনায় থাকছে জ্যোতিপ্রকাশ চট্টোপাধ্যায়ের ‘নির্বাপিত সূর্যের সাধনা’, রবার্ট জুঙ্কের ‘ব্রাইটার দ্যান আ থাউজ়েন্ড সান্স’-এর কথাও।

Advertisement

বস্তুত জুন-জুলাই থেকে‌ই ফেসবুকের বইপডু়য়াদের নানা গ্রুপে একাধিক আলোচনায় উঠে আসছে ‘বিশ্বাসঘাতক’-এর কথা। চলছে বই আর ছবির তুলনামূলক চুলচেরা বিশ্লেষণ। নোলানের ছবিটি অবশ্য ২০০৬ সালের পুলিৎজ়ার পুরস্কার পাওয়া বই ‘আমেরিকান প্রমিথিয়ুস: দ্য ট্রায়াম্ফ অ্যান্ড ট্র্যাজেডি অব জে রবার্ট ওপেনহাইমার’ বইটি থেকে অনুপ্রাণিত। সমাজমাধ্যমে তেমন তেমন জমায়েতে সেই বই নিয়েও আলোচনা দেখা গিয়েছে। আবার ওপেনহাইমারের গীতা আওড়ানোর কথা টেনে এনে গীতা-মহাভারত-রামায়ণের দিকেও পাঠকের আগ্রহ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকে।

পুস্তক বিক্রেতা তরুণ শ-এর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, জুলাই মাসের প্রথম থেকেই ভীষণ ভাবে বিক্রি বেড়ে গিয়েছে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বইটির। তাঁর কথায়, ‘‘এক এক সময় হুজুগ ওঠে এমন। সিনেমায় আগ্রহী হয়ে লোকে বই কিনতে শুরু করে। বিশ্বাসঘাতকের ক্ষেত্রেও তাই-ই হয়েছে।’’ বাংলা বই থেকে ছবি হলে যে রকম উদ্দীপনার সঞ্চার হয়, এ বার হলিউডের সিনেমার সঙ্গে বাংলা বইকে জুড়ে সেই দৃশ্য
দেখা যাচ্ছে।

Advertisement

সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় জানালেন, তাঁর রচিত গোয়েন্দা শবর দাশগুপ্তের বইগুলির বিক্রি আগের থেকে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে সিনেমা হওয়ার পরে। ‘বিশ্বাসঘাতক’ প্রসঙ্গে তাঁর উক্তি, ‘‘নারায়ণ সান্যালের ক্ষেত্রে এটা আগেও হয়েছে। তিনি খুব‌ই জনপ্রিয় লেখক ছিলেন। একই কথা বলা চলে নিমাই ভট্টাচার্যের ক্ষেত্রেও। তাঁর লেখা ‘মেমসাহেব’ ছবি হওয়ার পরে বইটা আরও বেশি করে পাঠকের কাছে পৌঁছয়। মনে পড়ে আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের কথাও, তাঁর কাহিনি অসম্ভব সিনেমাটিক ছিল। উত্তম সুচিত্রার বহু ছবি হয়েছে তাঁর লেখা থেকে।’’ সিনেমা থেকে বই পড়া সংক্রান্ত প্রশ্নটি রাখা গেল এই প্রজন্মের এক সদ্যকিশোরীর কাছে। লাজুক হেসে তার উত্তর, ‘‘সীমাবদ্ধ ছবিটা দেখেছি আগেই, এই বইমেলায় বাবাকে বললাম শংকরের লেখা বইটা কিনে দিতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন