অমিত খুনের রায়ের কপি নিল সিআইডি

পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাতেই কলকাতার ভবানীভবন থেকে সিআইডি-র একটি দল সিউড়ি এসে জেলা আদালতের ওই মামলার ৬৮ পাতার রায়ের কপি নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩২
Share:

বীরভূমের দুবরাজপুরে রাজ্য পুলিশের প্রয়াত সাব ইনস্পেক্টর অমিত চক্রবর্তী।

বোমায় নিহত দুবরাজপুর থানার এসআই অমিত চক্রবর্তীর খুনের মামলা নিয়ে এ বার নড়াচড়া শুরু করল সিআইডি। পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাতেই কলকাতার ভবানীভবন থেকে সিআইডি-র একটি দল সিউড়ি এসে জেলা আদালতের ওই মামলার ৬৮ পাতার রায়ের কপি নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে।

Advertisement

বীরভূম জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘‘কী কারণে বলতে পারব না, তবে সিআইডি রায়ের প্রতিলিপি নিয়েছে।’’ সিআইডি-র এক কর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা রায়ের প্রতিলিপি-সহ গোটা মামলাই নতুন করে খতিয়ে দেখবেন। কিছু করা সম্ভব কিনা, তা-ও দেখা হবে। মামলার তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে সিআইডি কথা বলেছেও বলে সূত্রের খবর।

অমিত-খুনের ঘটনায় সোমবার বেকসুর খালাস পেয়ে যান ১৮ জন অভিযুক্তই। খুনের তদন্ত যে ঠিক ভাবে হয়নি, তা সে দিন রায় দেওয়ার সময় বলেছিলেন বীরভূমের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সোমেশচন্দ্র পাল। সরকারি আইনজীবীও জানিয়েছিলেন, সন্দেহাতীত ভাবে দোষ প্রমাণ করতে না-পারায় অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। নিজের দফতরের দিকে গাফিলতির আঙুল তোলেন নিহত অমিতের পুলিশকর্মী স্ত্রী পুতুল সরকার চক্রবর্তীও।

Advertisement

২০১৪-র ৩ জুন দুবরাজপুরের যশপুর পঞ্চায়েতের আউলিয়া গোপালপুর গ্রামে ১০০ দিন প্রকল্পে একটি পুকুর সংস্কার করাকে ঘিরে তৃণমূল-সিপিএমের সংঘর্ষ শুরু হয়। সেখানে গিয়ে দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে মারাত্মক জখম হন অমিত। দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ২৮ জুলাই তিনি মারা যান। সিপিএম, তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আইনজীবীদের একাংশের দাবি, মামলার প্রথম থেকেই পুলিশ তেমন তৎপর ছিল না। প্রচুর ফাঁকফোকর ছিল তদন্তে ও মামলা সাজানোয়। এমনকি, চার্জ গঠনের আগে ৩৬ জন অভিযুক্তের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন করেন তৎকালীন সরকারি আইনজীবী (পিপি) রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সমালোচনায় নিজের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াতে হয় তাঁকে। অমিতের স্ত্রী-র আবেদনে পিপি বদলও হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, অমিত মারা যাওয়ার পরেই পুলিশের নিচুতলার মনোবল ধাক্কা খেয়েছিল। এ বার ১৮ অভিযুক্ত খালাস হয়ে যাওয়ায় আরও অপ্রিয় প্রশ্ন উঠেছে। এ সবের জেরেই সিআইডি-র বীরভূমে আসা—এমনটাই মনে করছেন পুলিশকর্মীদের একাংশ। পুতুল বলেন, ‘‘এই বিচার তো প্রাপ্য ছিল না। শোরগোলটাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এটা (সিআইডি-র নড়াচড়া) সান্ত্বনা পুরস্কার কিনা, জানি না। তবে এটা বলতে পারি, প্রকৃত তদন্ত হলে আমার চেয়ে বেশি খুশি কেউ হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন