কেতুগ্রামের খুনে আঁধারেই পুলিশ, ঘুরে এল সিআইডি

খুনির খোঁজে পুলিশ-কুকুর নামানো হয়নি। বাজেয়াপ্ত করা হয়নি মৃতার ব্যবহৃত মোবাইল। ধরা পড়েনি কেউ। এরই মধ্যে কেতুগ্রামের কাঁটাড়ি গ্রামে ঘটনাস্থল দেখে চলে এল সিআইডি-র একটি দল। যদিও সরকারি ভাবে সিআইডি এখনও তদন্তভার হাতে নেয়নি। কিন্তু সাহিনা খাতুন খুন হওয়ার দু’দিন পরেও তদন্তের যা অগ্রগতি, তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৫ ০৩:১৮
Share:

শুক্রবার কেতুগ্রামের কাঁটারি গ্রামে গুলিতে খুন হওয়া তরুণীর বাড়িতে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। —নিজস্ব চিত্র।

খুনির খোঁজে পুলিশ-কুকুর নামানো হয়নি। বাজেয়াপ্ত করা হয়নি মৃতার ব্যবহৃত মোবাইল। ধরা পড়েনি কেউ।

Advertisement

এরই মধ্যে কেতুগ্রামের কাঁটাড়ি গ্রামে ঘটনাস্থল দেখে চলে এল সিআইডি-র একটি দল। যদিও সরকারি ভাবে সিআইডি এখনও তদন্তভার হাতে নেয়নি। কিন্তু সাহিনা খাতুন খুন হওয়ার দু’দিন পরেও তদন্তের যা অগ্রগতি, তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শুক্রবার দুপুরে সাহিনার বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

বুধবার গভীর রাতে নিজের বাড়ির কাছেই একটি পোড়ো বাড়িতে পিঠে ও মাথায় গুলি করে মারা হয় সাহিনাকে। মৃত্যুর আগে সাহিনা যে পালানোর মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন, তার প্রাথমিক প্রমাণ পুলিশ পেয়েছে। তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে পরিবারের একটি সূত্রে অভিযোগ করা হলেও, সেই রাতে সাহিনার সঙ্গে থাকা বোনপো পারভেজ জানিয়েছে, মোবাইলে ফোন পেয়েই ঘর ছেড়ে বেরিয়েছিলেন বছর কুড়ির তরুণী।

Advertisement

পুলিশ কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে কোনও মোবাইল পায়নি। এ দিন কেতুগ্রাম থানা সূত্রে জানানো হয়, মোবাইলটি বাড়িতেই রয়েছে। সেটির ‘কল লিস্ট’ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতভর কাঁটাড়ি গ্রামে তল্লাশি চালানো হয়। তদন্তে কিছু নাম উঠে এসেছে। খুঁটিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পোড়োবাড়িতে যে তিনটি কার্তুজের খোল মিলেছিল, সেগুলি ব্যালেস্টিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। সাহিনার জামাকাপড়ও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

সাহিনার দাদা চাকরি সূত্রে ওড়িশায় ছিলেন। এ দিন বাড়ি ফিরে তিনি বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, বোনকে অপহরণ করেই খুন করা হয়েছে। সিআইডি তদন্ত দাবি করছি।’’ দুপুর ২টো নাগাদ তাঁদের বাড়িতে যান অধীর। সাহিনার মা ও দাদাকে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের নীরবতা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, কতটা ভয় পেয়েছেন। পুলিশ নিষ্ক্রিয়, খুনের কিনারা হয়নি। আপনারা লড়লে আমরা শেষ পর্যন্ত সঙ্গে থাকব।’’

বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সিআইডি-র একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। দু’এক দিনের মধ্যে পুলিশ কুকুর এনে তদন্ত করানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। ঘটনার দু’দিন পরেও গ্রামের পরিবেশ থমথমে। সাহিনার বান্ধবী পলি খাতুন বলে, ‘‘আমরা সাইকেলে করে পাশের গ্রামে বা দূরে কান্দরায় টিউশন পড়তে যাই। খুব ভয় পাচ্ছি।’’ সাহিনার দিদি, কিসমত তারা বিবির দাবি, ‘‘আমাদের পরিবারের সঙ্গে গ্রামের কারও শত্রুতা ছিল না। বোনের সঙ্গে কেন এমন ঘটল, তার তদন্ত হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন