বেআইনি নির্মাণ, হাঁসফাঁস নিকাশি

সূত্রের খবর, প্রতি বর্গফুটে ৮০ টাকা করে জমা নিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণের অনুমোদন দেয় নগরোন্নয়ন দফতর। এই নিয়ম অনেক দিন ধরেই রয়েছে। কিন্তু এখন পুরসভা তার বদল চাইছে।

Advertisement

সোমনাথ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:৫০
Share:

এ ভাবেই সল্টলেকে বাড়ছে বেআইনি নির্মাণ। ফাইল চিত্র

সল্টলেকের যত্রতত্র বেআইনি ভাবে হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণের অভিযোগ উঠছে। বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট পরিমাণ এলাকার অনুমোদন নিয়ে তার কয়েক গুণ বড় এলাকা ব্যবহার করা হচ্ছে এ সব নির্মাণে। ফলে এক দিকে নগরোন্নয়ন দফতরের লোকসান হচ্ছে, অন্য দিকে পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থার উপর চাপ পড়ছে।

Advertisement

এই অবস্থায় পুরসভা জানাচ্ছে, যে কোনও নির্মাণের জন্য অনুমোদন দেওয়ার আগে, পুরসভার থেকে নো অবজেকশন শংসাপত্র নিক নগরোন্নয়ন দফতর। সূত্রের খবর, প্রতি বর্গফুটে ৮০ টাকা করে জমা নিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণের অনুমোদন দেয় নগরোন্নয়ন দফতর। এই নিয়ম অনেক দিন ধরেই রয়েছে। কিন্তু এখন পুরসভা তার বদল চাইছে। এই বিষয়ে ১৪ অক্টোবর পুরসভার মেয়র ইন কাউন্সিলের বৈঠকে নগরোন্নয়ন দফতরকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন,‘‘আমরা নগরোন্নয়ন দফতরকে চিঠি দিচ্ছি। বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য নগরোন্নয়ন দফতর থেকে অনুমোদন নিচ্ছে দু’শো বর্গফুটের। সেই মতো টাকাও জমা দিচ্ছে। অথচ বাস্তবে তারা দু’হাজার বর্গফুট জায়গা ব্যবহার করছে। এতে পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নগরোন্নয়ন দফতরের আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে। তাই চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

পুরসভার এক কর্তার কথায়, সল্টলেকে মোট ২১ হাজার প্লট রয়েছে। তার মধ্যে ফার্স্ট অ্যাভিনিউয়ের উপর কিছু জমিকে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য নগরোন্নয়ন দফতর চুক্তি করেছে। ১৯৭৬ সালে জমি হস্তান্তরের সময় সেই চুক্তি হয়েছে লেসির সঙ্গে। সেই মতো অল্প কিছু প্লটে দোকান রয়েছে। এ ছাড়া ১৫টি পুর বাজার রয়েছে সল্টলেকে। কিন্তু হোটেল বা অন্য কোনও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কোনও ব্যবস্থা ছিল না।

ওই কর্তা জানান, সল্টলেক মাস্টার প্ল্যান তৈরির সময় আবাসিকদের জন্য নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হয়। সেই মতো নিকাশি নালার আন্ডারগ্রাউন্ড পাইপ বসানো হয়। কিন্তু বহু সংখ্যায় হোটেল-রেস্তোরাঁ তৈরির পরে সল্টলেকের নিকাশি নালায় এত বর্জ্য জমতে থাকে, নালা মাঝে মধ্যেই আটকে যেতে থাকে। এই নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা একাধিক বার পুরসভার কাউন্সিলারদের কাছে ক্ষোভও প্রকাশ করছেন। তার পরেই মেয়র ইন কাউন্সিলের বৈঠকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পুরসভা সূত্রের খবর, সল্টলেকে অভিঝাত শপিং মল তৈরি হয়েছে, তৈরি হয়েছে বহু দোকান পাট। বাইরে থেকে প্রতিদিন সল্টলেক এবং সেক্টর ফাইভে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ কাজে আসেন। খাওয়া দাওয়া করেন। পরিকাঠামোর উপর চাপ বাড়ছে। এই সব দিক চিন্তা করেই পুরসভার নো অবজেকশন নিয়ে নির্মাণের অনুমোদন দেওয়ার জন্য নগরোন্নয়ন দফতরকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন