মৃত বিজেপি কর্মী উলেন রায়। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরকন্যা অভিযানে মৃত বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের মৃতদেহের দ্বিতীয় বার ময়তদন্তের নির্দেশ দিল জলপাইগুড়ির মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত। উলেনের পরিবারের অভিযোগ, নিরপেক্ষ ভাবে ময়নাতদন্ত করা হয়নি। তাঁর দিদি শান্তিবালা রায় এই অভিযোগ তুলে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন। মঙ্গলবার সেই আবেদন মঞ্জুর করে আদালত।
জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ও অভিযোগ করেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, রাত ১টার পর কেন ময়নাতদন্ত করা হল? জয়ন্ত জানান, উলেনের দেহের ময়নাতদন্তের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশে তিন সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। আগামিকাল বুধবার তাঁদের উপস্থিতিতে দিনের আলোয় ময়নাতদন্ত করা হবে। তার পরেই পরিবার উলেনের দেহ নেবে।
উলেনের মৃত্যুর প্রতিবাদে কলকাতায় মোমবাতি মিছিল করলেন রাজ্য বিজেপি-র নেতারা। ৬ মুরলীধর লেনে দলের রাজ্য দফতর থেকে মিছিল শুরু হয়। শেষ হয় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে বল্লভভাই পটেলের মূর্তির সামনে। এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন জয়প্রকাশ মজুমদার। এ ছাড়াও ছিলেন রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমিত্র খাঁ, ভারতী ঘোষ এবং অগ্নিমিত্রা পল-সহ আরও অনেকে।
সোমবার উত্তরকন্যা অভিযানে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হন উলেন রায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। উলেনের মৃত্যুকে ঘিরে তার পরই শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপি দাবি করেছে, উলেনকে হত্যা করেছে পুলিশ। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ খারিজ করে পাল্টা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, শুধুমাত্র জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছিল। কোনও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি। তা ছাড়া যথেষ্ট সংযত ছিল পুলিশ।
আদালতের নির্দেশনামা।
আরও পড়ুন: উত্তরকন্যা অভিযানে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু শটগানের গুলিতে, তদন্তভার সিআইডিকে
কিন্তু পুলিশের এই দাবিকে মানতে নারাজ বিজেপি। পরিস্থিতি নাটকীয় ভাবে মোড় নেয় মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আসার পরেই। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে সেই রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে টুইট করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, শটগানের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে উলেনের।
এই রিপোর্ট আসার পরেই সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছে, তা হলে উলেনকে গুলি করল কে? এই চাপানউতোরের মধ্যেই ময়নাতদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে উলেনের পরিবার। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে ফের ময়নাতদন্ত হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।