নগদে আগাম বেতনের দাবি

নোট-সঙ্কটে জেরবার গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের আংশিক সুরাহা দিতে নভেম্বর মাসের বেতন থেকে নগদে ১০ হাজার টাকা আগাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার প্রভাব পড়ল এ রাজ্যের সরকারি কর্মীদের উপরেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৫
Share:

নোট-সঙ্কটে জেরবার গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের আংশিক সুরাহা দিতে নভেম্বর মাসের বেতন থেকে নগদে ১০ হাজার টাকা আগাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার প্রভাব পড়ল এ রাজ্যের সরকারি কর্মীদের উপরেও। বাম-অবাম নির্বিশেষে বহু রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠনই বৃহস্পতিবার দাবি তুলেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারও কেন্দ্রের পথেই হাঁটুক। অর্থাৎ, নভেম্বরের বেতনের অংশ হিসাবে নগদে ১০ হাজার টাকা রাজ্য সরকার এখনই দিয়ে দিক। যাতে নগদ টাকা নিয়ে আপাতত তাঁরা যেন আর অনিশ্চয়তায় না ভোগেন। মাসের বাকি দিনগুলি নিশ্চিন্তে সংসার চালাতে পারেন। তা ছাড়া টাকার তোলার জন্য ব্যাঙ্ক বা এটিএমের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে কাজের সময় নষ্ট না হয়।

Advertisement

তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনও ওই দাবিতে সায় দিয়েছে। পাশাপাশি, নোট-সঙ্কট থেকে রেহাই দিতে নভেম্বর মাসের বেতন পুরোটাই নগদে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটি সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (নব পর্যায়)। এ ব্যাপারে আর্জি জানিয়ে মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ দিনই চিঠি দিয়েছে নবপর্যায়।

রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠনগুলির যুক্তি, নভেম্বরের বেতনের একটা অংশ আগাম নগদে দিলে রাজ্যের কোষাগারে বাড়তি কোনও চাপ পড়বে না। কারণ, এ ক্ষেত্রে সরকারকে কোনও বাড়তি টাকা কর্মীদের দিতে হবে না। বিজেপি প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশিস শীল এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক বিপুল রায়ের বক্তব্য, এই দাবি মেনে নেওয়া হলে অন্তত আগামী মাসে খরচের জন্য কর্মচারীরা কিছু নগদ টাকা তুলে রাখতে পারবেন।

Advertisement

তবে তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের মেন্টর গ্রুপের আহ্বায়ক মনোজ চক্রবর্তীর মতে, ‘‘রাজ্য সরকারগুলি যাতে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের বেতন নগদে আগাম দিতে পারে সে জন্য কেন্দ্রের সাহায্য করা উচিত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মোদী অপরাধ বুঝতে পেরে এখন কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের আগাম বেতন দিচ্ছেন। রাজ্য সরকারি কর্মীরাও আংশিক বেতন আগাম চাইলে আমাদের আপত্তি নেই।’’

প্রসঙ্গত, নোট বাতিলের বিরোধিতা করে সম্প্রতি কলকাতায় ব্যাঙ্কের সামনে লাইনে দাঁড়ানো মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তা-ই নয়, দিল্লি পর্যন্ত চলে গিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে দরবার করেছেন তিনি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে অবস্থানেও বসেছেন। এই প্রেক্ষাপটে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বক্তব্য, জনতার সমস্যা দূর করতে মুখ্যমন্ত্রী যখন এতই আন্তরিক, তা হলে এখন তিনি পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতাটা মিটিয়ে দিন। বিপুলবাবু আরও বলেন, ‘‘ সরকারি কর্মীদের জন্যও অভিন্ন বেতন কাঠামো চালু হোক।’’

তবে, নোট বাতিলের ঘটনাকে সামনে রেখে এক মাত্র কো-অর্ডিনেশন কমিটি কোনও নির্দিষ্ট দাবি দাওয়ার মধ্যে ঢুকতে চায়নি। কমিটির রাজ্য সম্পাদক মনোজ গুহ শুধু বলেন, ‘‘আমরা বলছি, নোট-সঙ্কটে রাজ্য সরকারি কর্মীরাও জেরবার। ফলে মুখ্যমন্ত্রী এমন ব্যবস্থা নিন, যাতে তাঁরা বেতনটা ঠিক ভাবে পেতে পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন