রাস্তার কাজ নিয়ে পূর্ত-পুলিশ তরজা

পূর্ত দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারের এই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বলে দিয়েছেন, ‘‘এমন সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে আপনারা জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে জানাবেন। সেখানে কোনও কাজ না-হলে সরাসরি লাল ফাইলে ওই চিঠি দিয়ে পূর্তসচিবের কাছে পাঠাবেন। ব্যবস্থা নেবেন পূর্তসচিব।’’

Advertisement

সোমনাথ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:৫৫
Share:

পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

বহু ক্ষেত্রেই রাস্তার কাজের জন্য ‘ডাইভার্সন’ বা যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। কিন্তু পুলিশ অনেক সময় গাড়ি ঘোরাতে চায় না। তখন সমস্যায় পড়তে হয় ইঞ্জিনিয়ারদের। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে করণীয় কী?

Advertisement

পূর্ত দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারের এই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বলে দিয়েছেন, ‘‘এমন সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে আপনারা জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে জানাবেন। সেখানে কোনও কাজ না-হলে সরাসরি লাল ফাইলে ওই চিঠি দিয়ে পূর্তসচিবের কাছে পাঠাবেন। ব্যবস্থা নেবেন পূর্তসচিব।’’

মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে পূর্তমন্ত্রী অরূপবাবু এবং পূর্তসচিব অর্ণব রায়ের সঙ্গে দফতরের এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার-সহ সব স্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে বৈঠক হয়। মাঝেরহাট উড়ালপুল ভেঙে যাওয়ার পরে রাজ্যের অন্যান্য সেতুর অবস্থা কী সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। মন্ত্রী নিজে জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়ান দলের কাজে। তাই তিনি ইঞ্জিনিয়ারদের আরও সতর্ক হয়ে দ্রুত কাজ করার উপরে জোর দেন। কাজে গাফিলতি হলে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের উপরে দায়িত্ব বর্তাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

Advertisement

এই পরিপ্রেক্ষিতেই পুলিশের সঙ্গে পূর্ত বিভাগের বিরোধের অভিযোগ উঠছে। ডাইভার্সন নিয়ে পূর্ত দফতরের তোলা অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। রাজ্য ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, পূর্ত দফতরের কোনও উড়ালপুল বা সেতুর স্বাস্থ্য কেমন আছে, পুলিশ তা জানে না, সংশ্লিষ্ট দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরাই জানেন। পুলিশের তরফে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ, হাইটবার বসানো বা গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানানো হলে ব্যবস্থা নেওয়া হয় সঙ্গে সঙ্গেই। ‘‘মাঝেরহাট সেতুর বিষয়ে পূর্ত দফতর বা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও রকম চিঠি আমাদের কাছে আসেনি,’’ বলেন রাজ্য ট্রাফিক পুলিশের এডিজি বিবেক সহায়।

বিবেকবাবু আরও জানান, পূর্তসচিব একটি চিঠি দিয়ে ডানলপে নিবেদিতা সেতুতে গতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে বলেন। সেটা করা হয়েছে। বাঁকুড়া-দুর্গাপুর ব্যারাজে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে। যশোর রোডেও কিছু সমস্যা রয়েছে। সবই করা হচ্ছে। ‘সেফটি’ বা নিরাপত্তা নিয়ে তাঁরা কখনও কোনও ‘কম্প্রোমাইজ’ বা আপস করেন না বলে বিবেকবাবুর দাবি। তাঁর ব্যাখ্যা, গাড়ি ঘুরিয়ে দিলে বা গতি নিয়ন্ত্রণ করলে পুলিশেরও রাস্তায় কাজ করতে কিছু সমস্যা হয়। তাই তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে বলা হয় পূর্ত দফতরকে। ‘‘পথ-নিরাপত্তা নিয়ে কোনও গাফিলতি করে না পুলিশ,’’ বলেন বিবেকবাবু। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশে কর্মরত অফিসারদের একাংশের অভিমত, কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি তো প্রতিনিয়তই ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোন রাস্তা কত ক্ষণ বন্ধ থাকবে, তার নির্দেশ পেলেই সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক গার্ড তা পালন করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন