প্রাথমিকে পঞ্চম নিয়ে বেজায় ধন্দ শিক্ষকদের

প্রাথমিক স্তরে পঞ্চম শ্রেণিকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি তা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০১:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি

প্রাথমিক স্তরে পঞ্চম শ্রেণিকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি তা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর। কিন্তু প্রাথমিক স্কুলের পরিকাঠামো যা, তাতে সেখানে পঞ্চম শ্রেণি চালু হলে এক ধাক্কায় প্রায় ১৮ লক্ষ পড়ুয়া বেড়ে যাবে। ফলে সেটা আদৌ সামলানো যাবে কি না, তা নিয়েই ধন্দে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাই রাজ্য সরকার চাইলেও আগামী বছর থেকে এই পদ্ধতি চালু করাটা বেশ চ্যালঞ্জের বলে মনে করছেন স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারাই।

Advertisement

এ বছর প্রকাশিত সর্বশিক্ষা মিশনের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিকে অধিকাংশ স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আলাদা ঘর নেই। চেয়ার-টেবিল বাড়ন্ত। ফলে মেঝেতে বসেই পড়তে হয়। গ্রামাঞ্চলে কোথাও কোথাও এক বেঞ্চে ঠাসাঠাসি করে বসে ছ’সাত জন পড়ুয়া। শিক্ষক-পড়ুয়া অনুপাত সাধারণ ভাবে ৩৫:১ থাকার কথা। কিন্তু কোথাও কোথাও সেটা ৫০:১ ছাড়িয়েছে। অভিযোগ, ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পৃথক শৌচালয়ও নেই অনেক স্কুলে। থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তা ব্যবহারের অযোগ্য। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চম শ্রেণির বিপুল সংখ্যক পড়ুয়াকে প্রাথমিক স্কুলে পাঠাতে হলে একাধিক পৃথক ঘর তৈরি করতে হবে। ব্যবস্থা করতে হবে শৌচালয়েরও। ৬০ হাজার স্কুলে ১৮ লক্ষ পড়ুয়াকে ঠাঁই দিতে গেলে পরিকাঠামোয় যে ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন, দফতর সেটা আদৌ করতে পারবে কি না, তা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে শিক্ষকদের।

২০১৭ সালে শেষ বার প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। পঞ্চম শ্রেণি প্রাথমিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত হলে ফের শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন। অন্য দিকে উচ্চ প্রাথমিকে একটি শ্রেণি কমে গেলে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টমে শিক্ষক বাড়তি হতে পারে। শূন্য পদে নিয়োগের যে-উদ্যোগ চলছে, তার কী হবে, উঠছে সেই প্রশ্নও।

Advertisement

নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সমর চক্রবর্তী জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই পঞ্চমকে প্রাথমিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছেন। পরিকাঠামোর কী হবে? সমরবাবু বলেন, ‘‘শুধু প্রাথমিক নয়, সর্বত্রই পরিকাঠামো খারাপ।’’ পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘আমরাও এর পক্ষে। কিন্তু সব কিছুর আগে পরিকাঠামোর উন্নয়ন প্রয়োজন।’’

শিক্ষা শিবিরের দাবি, পরিকাঠামোর দিক থেকে প্রাথমিক স্কুলগুলিকে আরও উন্নত করা দরকার। প্রাথমিক শিক্ষায় বরাদ্দও বাড়ানো উচিত। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, এই সব কারণেই তো আলোচনা চলছে। তবে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন