মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
অতীতেও এক বার অপ্রয়োজনে খরচ না-করার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। বাজে খরচ কমাতে এ বার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে অপ্রয়োজনীয় খরচের সূত্রগুলি খুঁজে বার করার কাজ শুরু করেছে বহু দফতর। আধিকারিকদের একাংশের ধারণা, আগেকার বার্তায় তেমন কাজ হয়নি বলেই মন্ত্রিসভার গত বৈঠকে রীতিমতো নির্দেশ দিতে হয়েছে মমতাকে। ৫ জুলাই খরচ নিয়ন্ত্রণের রূপরেখা তৈরি করতে সব দফতরকে বৈঠকে ডাকছেন মু্খ্যমন্ত্রী।
কিছু মন্ত্রীর ব্যাখ্যা, খরচের দিক থেকে প্রধানত নিগমগুলিকে সতর্ক করতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, সরকার লক্ষ করেছে, অফিসারদের কেউ কেউ ইকনমি ক্লাসের পরিবর্তে বিজনেস ক্লাসে ভ্রমণ করেন। নিয়ন্ত্রণ থাকছে না গাড়ি ব্যবহারেও। অনুষ্ঠানে জৌলুস এবং উপহারের বহরে খরচ বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। তারামার্কা হোটেলে অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে বহু ক্ষেত্রে।
অর্থ দফতর অবশ্য ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, বৈঠক ও অনুষ্ঠানের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে অনুষ্ঠানের জন্য বেসরকারি হোটেল বা পরিকাঠামো ব্যবহার করতে চাইলে আগে থেকে মুখ্যসচিবের অনুমতি নিতে হবে সব দফতরকেই।
এক মন্ত্রীর কথায়, ‘‘কোথায় কোথায় খরচ কমানো সম্ভব, তার একটা রূপরেখা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছি।’’ অন্য এক মন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে কয়েক কোটি টাকা বাঁচানো গেলে তার ইতিবাচক ব্যবহার সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী জানান, মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। কোন দফতরে কত লোক লাগবে, কত খরচ হবে, সেটা ঠিক কি না— সবই খতিয়ে দেখবে ওই কমিটি। ‘‘৪৩ হাজার কোটি টাকার দেনা রয়েছে রাজ্যের ঘাড়ে। খরচ করলেই হবে না, সাশ্রয় করতে হবে। তাই ৫ জুলাই বৈঠক ডাকা হয়েছে। খরচ কমাতেই হবে,’’ বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিনই মমতা জানান, সরকারি প্রকল্পের ডিটেল প্রজেক্ট বা ডিপিআর রিপোর্ট ঠিক আছে কি না, তা দেখার জন্য অর্থ দফতরের অধীনে প্রজেক্ট ক্লিয়ারেন্স কমিটি গড়া হয়েছে। তার নেতৃত্বে থাকবেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারিং চিফ শ্রীকুমার ভট্টাচার্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেড় কোটি টাকার একটা কাজ ১৯ কোটি টাকা করা হয়েছে। আমি নিজে এটা ধরেছি। এগুলো দেখবে নতুন কমিটি।’’