মুখ্যমন্ত্রীর কাটআউট-হোর্ডিং ‘উধাও’!

খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাটআউট উধাও। তাও আবার তাঁর বাড়ির কাছে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের পাশে। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি সংলগ্ন এলাকা সবসময়ই হাই সিকিউরিটি এলাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০৪:০৬
Share:

খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাটআউট উধাও। তাও আবার তাঁর বাড়ির কাছে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের পাশে। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি সংলগ্ন এলাকা সবসময়ই হাই সিকিউরিটি এলাকা। পুলিশি নজরদারি প্রখর থাকে আলিপুর জেলের কাছেও। এর মধ্যে থেকেই হাওয়া মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তিরিশ ফুটের কাট আউট সহ শুভেচ্ছার হোর্ডিং। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা তৃণমূল নেত্রী দেবলীনা বিশ্বাস জানান, দলের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

Advertisement

কোথায় ছিল ওই কাটআউট? কী বা লেখা ছিল তাতে? তৃণমূলের ৭৪ নং ব্লকের সভাপতি বিপ্লব মিত্র জানান, পুজোর পরেই গোপালনগর মোড়ের একপাশে মুখ্যমন্ত্রীর একটি তিরিশ ফুটের কাটআউট লাগানো হয়েছিল। এ ছাড়া ওই মোড়ের অন্য দিকে দীপাবলি এবং ছট পুজোর শুভেচ্ছা সহ দুটি হোর্ডিং ছিল। যাতে মুখ্যমন্ত্রীর নামের সঙ্গে এলাকার কাউন্সিলর দেবলীনা বিশ্বাস এবং ব্লক সভাপতি হিসেবে তাঁর নাম ছিল। কিন্তু সোমবার সকালে দেখা যায় কাটআউট সহ হোর্ডিং দুটি উধাও। কে বা কারা এর পিছনে রয়েছে তা জানতেই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন।

প্রশ্ন উঠছে, বর্তমানে তৃণমূল এতটাই শক্তিশালী যে অন্য কারও পক্ষে ওই কাটআউট খোলার সাহস কারও থাকতে পারে না। তাহলে কী তৃণমূলের কারও যোগ রয়েছে এই ঘটনার পিছনে?

Advertisement

দেবলীনার দাবি, তা হতেই পারে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সবাই দিদির অনুগামী। তাই দলের কেউ এ কাজ করতে পারে না।’’ তা হলে কে করেছে? কাউন্সিলর বলেন, ‘‘তা জানতেই তো বিপ্লববাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, গোপালনগর মোড়ের ওই ঘটনায় তৃণমূল স্থানীয় নেতা বিপ্লব মিত্র আলিপুর থানায় চুরির অভিযোগে দায়ের করেছেন। যার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করলেও সোমবার রাত পর্যন্ত মামলা পুলিশ শুরু করেনি বলে লালবাজার সূত্রের খবর। স্থানীয় তৃণমূল সূত্রের খবর, রাস্তায় থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে একটি ছোট গাড়ি করে কেউ ওই হোডিং খুলে নিয়ে গিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই অভিযোগ পাওয়ার পরে তা খতিয়ে শুরু হয়েছে। কিন্তু মামলা করা হয়নি। যদি দেখা যায় কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সহ কাউআউট সরিয়েছে তবেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও।

রাজনৈতিক এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, যে এলাকায় তৃণমূল নেতার পক্ষ থেকে ওই চুরির অভিযোগ করা হয়েছে, সেখানে শাসকদলের প্রাধান্য আশাতীত। তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাটআউট খোলার সাহস কার হলো তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের নজরদারি নিয়ে। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিভাজন রয়েছে। যার একদিকে অভিযোগকারী নেতা বিপ্লব মিত্র। অন্যদিকে এলাকারই অন্য এক নেতা। বিপ্লব মিত্রের ঘনিষ্ঠ কিছু তৃণমূল কর্মীর বক্তব্য, দলেরই কারও মদত ছাড়া ওই তিরিশ ফুটের কাউআউট খোলা সম্ভব না। তবে তাঁরা কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ জানাতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন