আনাজের বীজ রাজ্যেই ফলাতে নির্দেশ মমতার

সাধারণ আনাজগুলির বীজ যাতে রাজ্যেই উৎপাদন করে চাষিদের বিলি করা যায়, সে জন্য কৃষি দফতর এবং রাজ্য বীজ নিগমকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।পশ্চিমবঙ্গে আনাজ চাষের প্রায় ৮৯ শতাংশ বীজই আনতে হয় অন্য রাজ্য থেকে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৩
Share:

সাধারণ আনাজগুলির বীজ যাতে রাজ্যেই উৎপাদন করে চাষিদের বিলি করা যায়, সে জন্য কৃষি দফতর এবং রাজ্য বীজ নিগমকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গে আনাজ চাষের প্রায় ৮৯ শতাংশ বীজই আনতে হয় অন্য রাজ্য থেকে। রাজ্যে বীজ তৈরির পরিকাঠামো না-থাকায় বছরের পর বছর এ ভাবেই চলেছে। বাকি যেটুকু বীজ রাজ্যে মেলে, তার অনেকটাই আবার বেসরকারি উদ্যোগের। সম্প্রতি নবান্নে আনাজ নিয়ে একটি বৈঠকে এমনই তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। যে সব আনাজর বীজের জোগান খুবই কম তার মধ্যে রয়েছে ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙে, করলা, উচ্ছে, লাউ, কুমড়ো, টোমাটো, বেগুন, বরবটি, লঙ্কা, পিঁয়াজ, পালং এবং নটে শাক। অথচ রাজ্যে এই সব আনাজের চাহিদা সব চেয়ে বেশি। এই আনাজগুলির ফলন বাড়াতে যে বীজের উৎপাদন বাড়ানোও জরুরি, তা বুঝছে কৃষি দফতর। এ বার তাই একাধিক প্রকল্প হাতে নিচ্ছে তারা।

নবান্ন সূত্রের খবর, ২০১১ সালের আগে রাজ্যে আনাজ চাষের জন্য বীজের উৎপাদন ছিল মোট চাহিদার মাত্র ৫ শতাংশ। গত ৫ বছরে তার পরিমাণ কিছুটা বেড়ে হয়েছে ১১ শতাংশ। ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন-এর ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যালের অভিযোগ, বাম আমলে বীজ উৎপাদনে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সরকারের হাতেই ১৯৭টি খামার ছিল, যা পড়ে থেকে থেকে চাষের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। বাঁকুড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ও পেশায় কৃষি-অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ শুভাশিসবাবুর দাবি, সেই সব খামারের কয়েকটি ব্যবহার করেই গত কয়েক বছরে বীজ উৎপাদন সামান্য বাড়ানো গিয়েছে। তবে তা আরও অনেক বাড়াতে হবে।

Advertisement

রাজ্য কৃষি দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের মোট ৬টি বড় খামারে এ মরসুম থেকেই আনাজের বীজ উৎপাদনের কাজ শুরু করা হবে। এর মধ্যে তিনটি খামার দেওয়া হচ্ছে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ-এর হাতে। বাঁকুড়ার শুশুনিয়া, পুরুলিয়ার হাতিয়াড়া এবং বীরভূমের মুরারইয়ে এই বাগানগুলি রয়েছে। তিন বাগানে মোট জমির পরিমাণ ১২০০ বিঘেরও বেশি। রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানান, সব খামারেই যে আনাজের বীজ উৎপাদন শুরু হবে, তেমন নয়। কোথায় কোন বীজ হতে পারে, এলাকার পরিবেশ কতটা কোন আনাজর পক্ষে ফলপ্রস়ূ হবে— এ সব খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে দেখবেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। তাঁদের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই ঠিক হবে আগামী বছর থেকে কোন খামারে কী আনাজের বীজ উৎপাদন হবে।

শুভাশিসবাবু জানান, রাজ্য বীজ নিগমও তিনটি খামারের দায়িত্ব নিচ্ছে। সেখানে বীজ উৎপাদন ছাড়াও কৃষকদের হাতে কলমে আধুনিক প্রযুক্তির চাষ শেখানো হবে। বাঁকুড়ার শুশুনিয়ায় ইতিমধ্যেই একটি কৃষি কলেজ হয়েছে। চাষে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে সেটিরও সাহায্য নেওয়া হবে। তাঁর আশা, এর ফলে আনাজের পাশাপাশি ফল বা অন্য কোনও শস্যের বীজও উৎপাদন করা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন