উত্তরকন্যা বৈঠকের আঁচ শহরে

cms-meeting-in-uttarkanya-on-darjeelingবিনয় তামাঙ্গ দলবল নিয়ে এলেন কি না, গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ পাহাড়ের বিধায়কেরা বৈঠকে থাকছেন কি না, জিএনএলএফ বা জাপই বা কী বলছেন, তা নিয়ে চলেছে নানা বিশ্লেষণ।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩০
Share:

আলোচনা: পাহাড় সমস্যার সমাধানের খোঁজ করতে মঙ্গলবার উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সর্বদল বৈঠক।—বিশ্বরূপ বসাক

সোমবার থেকেই উত্তরকন্যা জুড়ে নিরাপত্তা। মঙ্গলবার সকাল থেকে যোগ হয় টানটান উত্তেজনা। কখনও টেলিফোন, কখনও এসএমএস, কখনও বা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট বা হোয়াটসঅ্যাপে ভেসে আসছিল, পাহাড় বৈঠক নিয়ে নানা ‘আপডেট’। উত্তরকন্যার ভিতরে থাকা বিভিন্ন দফতরে কাজের ফাঁকে মোবাইলে চোখ বুলিয়ে নিয়েছেন সরকারি কর্মী, অফিসারেরাও। বাইরে পুলিশ থেকে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ বাসিন্দা, কারও আগ্রহের খামতি ছিল না। শহরের মানুষ যেন উত্তরকন্যার দিকেই তাকিয়ে ছিলেন সারা দিন।

Advertisement

বিনয় তামাঙ্গ দলবল নিয়ে এলেন কি না, গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ পাহাড়ের বিধায়কেরা বৈঠকে থাকছেন কি না, জিএনএলএফ বা জাপই বা কী বলছেন, তা নিয়ে চলেছে নানা বিশ্লেষণ। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই মোবাইলে চলে আসে, বিমল গুরুঙ্গের অডিও বার্তা। তাতে বন্‌ধ চলার পক্ষে তিনি সওয়াল করায় পাহাড়ের গতিপ্রকৃতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে ফের শুরু হয়ে যায় নতুন আলোচনা।

আর্জি: ন্যায় চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা পাহাড়ের তৃণমূল কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র

Advertisement

সোমবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকন্যায় ঢুকে যেতেই পুলিশ, স্পেশ্যাল সিকিউরিটি ইউনিট (এসএসইউ) ঘিরে ফেলে গোটা এলাকা। সকাল থেকে ব্যারিকেড করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। উত্তরকন্যাগামী বিভিন্ন ছোট রাস্তা, ৩১-ডি জাতীয় সড়কের পাশেও রশি ও লোহার ব্যারিকেড বসিয়ে দেওয়া হয়। জায়গায় জায়গায় নিরাপত্তার জন্য অফিসারদের মোতায়েন করা হয়। প্রতিটি গাড়ি, বাইকে তল্লাশি চলে। আমন্ত্রিত ব্যক্তি, সরকারি অফিসার, সংবাদমাধ্যম ছাড়া কাউকে ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।

পাহাড়ের আন্দোলনের জেরে সমতলে আশ্রয় নিয়ে আছেন পাহাড়ের বহু তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরাও। তাঁরা জাতীয় সড়কের পাশে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। এনজেপি, ফুলবাড়ি থেকে বহু তৃণমূল কর্মী জড় হয়েছিলেন জাতীয় সড়কের ধারে। কোনও পাহাড়ি নেতার গাড়ি ঢুকল, কে বেরিয়ে গেলেন, তা নিয়ে কৌতুহল ছিল চোখে পড়ার মতো। বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপা বা শিরিং দাহাল, জিএনএলএফের মন ঘিসিঙ্গ থেকে হরকা বাহাদুর ছেত্রীদের সঙ্গেও গাড়ি করে এসেছিলেন পাহাড়ের লোকজন। রাস্তার এক পাশে তাদের দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। কালিম্পং, কার্শিয়াঙের কয়েকজন যুবক জানান, এই আলোচনার দরজা আগে খুললে হয়ত আগেই অনেক কি‌ছু হতে পারত। তিন মাস পাহাড়ে চরম দুর্ভোগে আছি। আবার বন্‌ধের, কার্ফুর না কি হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

এই সময় বৈঠক শেষ করে তামাঙ্গ বাইরে আসেন। পাহাড়ের ওই যুবকদের কথা শুনে তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ে তালিবানি শাসন চলবে না। আমাদের সবাইকে পাহাড়কে পুরানো ছন্দে ফেরানোর দায়িত্ব নিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন