ছবি: সংগৃহীত।
সেই সুবাস ঘিসিঙ্গের আমল থেকে এত দিন পাহাড়ে রাজ্য প্রশাসন ও পাহাড়ের বোর্ড আলাদা ভাবেই কাজ করত। একই ছবি দেখা গিয়েছে বিমল গুরুঙ্গের জিটিএ-র আমলেও। এ বারে বিনয় তামাঙ্গরা সেই প্রথা ভাঙার পথে প্রথম পদক্ষেপ করলেন। পাহাড়ে উন্নয়নের কাজে তাঁরা যে রাজ্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে উৎসাহী, সেটা স্পষ্ট করে দিয়ে শুক্রবার দুপুরে তাঁরা বৈঠক করলেন দুই জেলার জেলাশাসক-সহ প্রধান আধিকারিকদের সঙ্গে। সেখানেই ঠিক হল, যৌথ কমিটি গড়ে এগোবেন তাঁরা। এবং সেই কমিটি ১৫ দিন অন্তর আলোচনায় বসে প্রকল্পের কাজের তদারকি করবে।
বিনয়দের বক্তব্য, টানা ১০৪ দিন বন্ধের ফলে ব্যাহত হয়েছে পাহাড়ের উন্নয়নমূলক যাবতীয় কাজকর্ম। তাই এখন আর পারস্পরিক দোষারোপ করে কাজের গতি রুদ্ধ করা ঠিক নয়। তাই এ দিন দার্জিলিঙের লালকুঠিতে তাঁরা বৈঠক করেন দুই জেলার জেলাশাসক, মহকুমাশাসক ও বিডিও দফতরের অফিসারদের সঙ্গে। সেখানেই ঠিক হয়, পাহাড়ের ৮টি ব্লকে গড়া হবে ব্লক উন্নয়ন কমিটি। সেখানে বিডিও-রা আহ্বায়ক থাকবেন। কমিটির চেয়ারপার্সন, ভাইস চেয়ারপার্সনকে জিটিএ মনোনীত করবে। ১১ জনের এক একটি কমিটিতে স্বাস্থ্য, দুর্যোগ মোকাবিলা, যুব, কৃষি, খাদ্য-সহ বিভিন্ন দফতরের অফিসারেরা থাকবেন। প্রতি ১৫ দিন অন্তর কমিটি বসে প্রকল্পের কাজের তদারকি করবে।
জিটিএ-র প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা করেই সমস্ত কাজ একযোগে করতে চাই। কোথাও কোনও দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না।’’ দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘অধিকাংশ দফতরই জিটিএ অধীনে রয়েছে। কিন্তু সরকারি কাজে সমন্বয় প্রয়োজন। এ বারে সেই সমন্বয়টাই করা হবে।’’
এ দিন ১০০ দিনের কাজ, পেনশন, আবাসন-সহ বিভিন্ন প্রকল্প ধরে ধরে আলোচনা হয়। জিটিএ-র প্রধান সচিব সুব্রত বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনিক কর্তারা জানান, বিভিন্ন দফতর জিটিএ-র অধীনে হলেও তাঁরা রিপোর্ট জেলাশাসক বা মহকুমা শাসকের দফতরে জমা দিতেন। আগে এই নিয়ে জিটিএ-র তরফে অভিযোগ তোলা হতো। এ বার সমন্বয় করে এগোলে সেই কাজে আর সমস্যা হবে না।
এ দিনই ঠিক হয়েছে, আজ, শনিবার থেকে পাহাড়ে বন্ধের সময়কার সাড়ে ৩ মাসের রেশন বিলি শুরু হবে। ৮.৭১ লক্ষ রেশন কার্ড হোল্ডারদের জন্য পাহাড়ে প্রতি মাসে ৯ মেট্রিক টন রেশন প্রয়োজন হয়।
দার্জিলিঙের পাশাপাশি কালিম্পঙেও নব নির্বাচিত পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান সরকারের পুর দফতরের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ‘গ্রিন কালিম্পং’ প্রকল্প নিয়ে সভায় আলোচনা হয়। প্রতিটি কাউন্সিলরকে আবর্জনা সাফাই ছাড়াও খালি জমি চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। সেখানে পার্ক গড়ার প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পুরসভা।