ভর্তিতে টাকার খেলা, উদ্বেগ নেই প্রশাসনের

শিক্ষক মহলের দাবি, এখন মোটামুটি তিনটি পদ্ধতি চলছে। এক) প্রথমে জেনারেল কোর্সে ভর্তি করিয়ে পরে পছন্দের অনার্সে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দুই) সংস্কৃত, দর্শন, অর্থনীতির মতো অপেক্ষাকৃত কম চাহিদার বিষয়ে প্রথমে ভর্তি করানো হচ্ছে।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত ও সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৭ ০৩:৫০
Share:

মৌলানা আজাদ কলেজ। ছবি: সংগৃহীত।

শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, কলেজে ভর্তি হবে মেধার ভিত্তিতে। কিন্তু বাস্তবে অভিযোগ হল, কলেজে কলেজে প্রথম বর্ষের আসন বিক্রি হচ্ছে কোথাও ২০ হাজার, কোথাও ৫০ হাজারে। অভিযোগের আঙুল শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দিকেই।

Advertisement

শিক্ষক মহলের দাবি, এখন মোটামুটি তিনটি পদ্ধতি চলছে। এক) প্রথমে জেনারেল কোর্সে ভর্তি করিয়ে পরে পছন্দের অনার্সে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দুই) সংস্কৃত, দর্শন, অর্থনীতির মতো অপেক্ষাকৃত কম চাহিদার বিষয়ে প্রথমে ভর্তি করানো হচ্ছে। পরে পছন্দের অনার্স পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিন) ছাত্র সংসদের চাপে অনেক কলেজই অনার্সের মোট আসন সংখ্যা কমিয়ে দেখাচ্ছে। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে বাকি আসনে ছাত্র ঢুকছে।

ডিএসও-র রাজ্য সহ-সভাপতি সামসুল আলম বলেন, ‘‘টিএমসিপি ভর্তির সিন্ডিকেট রাজ চালাচ্ছে। সুরেন্দ্রনাথ, চিত্তরঞ্জন, মৌলানা আজাদ, জয়পুরিয়া-সহ বহু কলেজে টাকা নিয়ে ভর্তির অভিযোগ পেয়েছি।’’ এসএফআই কলকাতা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৌম্যজিৎ রজকের অভিযোগ, ‘‘খোলাখুলি আসন বিক্রি হচ্ছে। প্রতিবাদে ৩ জুলাই কলেজ স্ট্রিট অভিযান হবে।’’

Advertisement

শিক্ষাজগতের অনেকেই মনে করাচ্ছেন, এই অস্বচ্ছতা বন্ধ করার সবচেয়ে ভাল উপায় ছিল কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তি চালু করা। তৃণমূল সরকারের প্রথম মেয়াদে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সেই চেষ্টা করেওছিলেন। পরে সরকার তা থেকে পিছিয়ে আসে। শিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব হাতে নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কলেজভিত্তিক অনলাইন ভর্তি চালুর পথে হাঁটেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় অনলাইন ব্যবস্থা ছাড়া যে অস্বচ্ছতা আটকানো যাবে না, সে কথা শিক্ষা মহল বারবারই বলেছেন। সে আশঙ্কা যে কতটা সত্য, আসন বেচাকেনার ব্যাপক অভিযোগে তা-ই প্রমাণ হচ্ছে।

আরও পড়ুন: বর্ষণের বার্তা নিম্নচাপে

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে তো সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেনই মানছেন, জেনারেল কোর্সে মেধাভিত্তিক অনলাইন ভর্তিও চালু নেই। তাঁর দাবি, জেনারেল কোর্সে ছাত্র মেলে না। অথচ জেনারেল কোর্সের সুযোগ নিয়েই দেদার আসন বিকোচ্ছে বলে অভিযোগ।

শিক্ষামন্ত্রী নিজে এর আগে ছাত্র ভর্তিতে অস্বচ্ছতার পিছনে ছাত্র সংসদের হাত, টাকাপয়সার লেনদেনের কথা স্বীকার করেছিলেন। অথচ তিনিই কেন্দ্রীয় অনলাইনের প্রস্তাব বাতিল করেন। এর পিছনে দলীয় ছাত্র সংগঠনের চাপ ছিল বলেও সূত্রের খবর। পার্থবাবু এখন বলছেন, ‘‘যতটুকু করার, করা হয়েছে। এর বেশি কিছু পারব না।’’ প্রশাসনের শীর্ষ স্তর থেকেও বলা হচ্ছে, এটি কোনও সামগ্রিক সমস্যা নয়। কোথাও গোলমাল হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেমন বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন