ফের জট হলদিয়ায়, বন্ধ জাহাজ আসা-যাওয়া

প্রতিদিন হলদিয়ায় অন্তত ছ’টি জাহাজ পণ্য় নিয়ে আসে এবং ছ’টি জাহাজ মাল নামিয়ে বেরিয়ে যায়। সোমবার একটি জাহাজও আসেনি। বন্দর ছেড়ে যেতেও পারেনি কোনও জাহাজ। স্যান্ডহেডস-এ দাঁড়িয়ে আরও ২৮টি জাহাজ। বন্দরের দাবি, সমস্যা জেনে ১১টি জাহাজ হলদিয়ায় না এসে অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:২২
Share:

হলদিয়া বন্দরে আটকে বিদেশি জাহাজ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

শ’খানেক কর্মীর কর্মবিরতির জেরে ফের জট পাকল হলদিয়া বন্দরে। ‘ম্যুরিং গ্যাং’ নামে পরিচিত এই শ্রমিকেরা বন্দরে জাহাজ ভিড়লে তা দড়ি দিয়ে বাঁধার কাজ করেন। কিন্তু বাড়তি শ্রমিক নিয়োগের দাবিতে আপাতত তাঁরাই কাজ বন্ধ করেছেন। ফলে রবিবার রাত থেকে হলদিয়া বন্দরে জাহাজ আসা-যাওয়া বন্ধ।

Advertisement

প্রতিদিন হলদিয়ায় অন্তত ছ’টি জাহাজ পণ্য় নিয়ে আসে এবং ছ’টি জাহাজ মাল নামিয়ে বেরিয়ে যায়। সোমবার একটি জাহাজও আসেনি। বন্দর ছেড়ে যেতেও পারেনি কোনও জাহাজ। স্যান্ডহেডস-এ দাঁড়িয়ে আরও ২৮টি জাহাজ। বন্দরের দাবি, সমস্যা জেনে ১১টি জাহাজ হলদিয়ায় না এসে অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছে। আর পণ্য খালাস করেও ৯টি জাহাজ বেরোতে পারছে না। হলদিয়া বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (ট্রাফিক) স্বপনকুমার সাহা রায় বলেন, ‘‘রবিবার রাত থেকে বেশ কিছু শ্রমিক কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। বেশ কিছু জাহাজ আটকে রয়েছে।’’

লক গেট, লকগেটের ভিতরের বার্থ এবং অয়েল জেটিগুলিতে প্রায় শ’খানেক কর্মী তিনটি দলে ভাগ করে কাজ করেন। কাজ মূলত জাহাজ এলে দড়ি বা শিকল দিয়ে বার্থের সঙ্গে বাঁধা। রবিবার রাতে লকগেটের ভিতরের বার্থে জাহাজ ভিড়লে তা বাঁধার প্রয়োজন পড়লে দেখা যায় লোকজন নেই। হাজিরা খাতায় ৭-৮ জন সই করলেও ডকে ছিলেন না। বন্দর কর্তৃপক্ষ এক কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন। কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয় কয়েকজনকে। তারপরই তিনটি ম্যুরিং গ্যাং কাজ বন্ধ করে দেয়।

Advertisement

পতাকা ছাড়াই আন্দোলনে নেমেছেন শ্রমিকেরা। নেতারাও প্রকাশ্যে আন্দোলন সমর্থনের কথা বলছেন না। কর্মবিরতির কথা মানলেও হলদিয়ায় ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের নেতা প্রদীপকুমার বিজলির বক্তব্য, ‘‘আমরা বন্দর অচল করে দাবি আদায়ের বিপক্ষে।’’ ‘কলকাতা ডক কমপ্লেক্স পার্মানেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-এর নেতা দেবাশিস চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘বাইরে রয়েছি। কী হয়েছে জানি না।’’ বিষয়টি ‘খোঁজ নিয়ে দেখা’র কথা বলেছেন স্থানীয় সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী।

গত জুলাই ও ডিসেম্বরেও টানা বেশ কয়েক দিন শ্রমিক আন্দোলনে ধাক্কা খেয়েছিল হলদিয়া বন্দরে পণ্য ওঠানো-নামানো। বন্দর কর্তাদের দাবি, রবিবার থেকে তৈরি হওয়া অচলাবস্থায় ইতিমধ্যে ১০ কোটি টাকা রাজস্ব লোকসান হয়েছে। স্যান্ডহেডস-এ জাহাজ একদিন বাড়তি দাঁড়ালেই ১৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। এমন চললে হলদিয়ায় জাহাজ আসাই কিছু দিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা। বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমারের বক্তব্য, ‘‘অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখনই কিছু বলছি না।’’ যদিও বন্দরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘শৃঙ্খলা মেনে কাজ করতে হবে কর্মীদের। সই করে কেন তাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন, তার কারণ বলতে হবে। এই ধর্মঘট বেআইনি। কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement