পড়ুয়ার অভাবে সামগ্রিক ভাবেই ধুঁকছে রাজ্যের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। কিছু কলেজে আবার খাঁ খাঁ করছে বিশেষ কয়েকটি বিভাগ। এই পরিস্থিতিতে ওই কলেজগুলি সম্পূর্ণ বন্ধ অথবা পড়ুয়াহীন বিভাগগুলি বন্ধ করতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে। এই বিষয়ে কী করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈকত মৈত্রের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করেছে সরকার।
রাজ্যে এখন কমবেশি ৮০টি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রয়েছে। মোট আসন সংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার। কয়েক বছর ধরেই শোনা যাচ্ছে, প্রথম সারির কয়েকটি কলেজ ছা়ড়া বাকিগুলিতে পর্যাপ্ত পড়ুয়া ভর্তি হচ্ছে না। গত বছর কেন্দ্রীয় এবং বিকেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিংয়ের পরে প্রায় ১৪ হাজার আসন ফাঁকা ছিল। বহু পড়ুয়া ভিন রাজ্যের কলেজেও চলে যাচ্ছেন। অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই) ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, পাঁচ বছর ধরে যে সব কলেজে ৩০% আসনে কোনও পড়ুয়া নেই, সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি কলকাতা লাগোয়া এলাকা এবং জেলার ১৫টি কলেজ নিজে থেকেই রাজ্য সরকারের কাছে বন্ধের আর্জি জানিয়েছে। মূলত ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন টেকনোলজি, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের মতো বিষয়ে তারা পড়ুয়া পাচ্ছে না।
শিক্ষা জগতের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের মূল লক্ষ্য শিক্ষান্তে চাকরি। কিন্তু এই কলেজগুলিতে পড়া ব্যয়বহুল হলেও ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ থেকে চাকরি মেলে না বলে অভিযোগ। অনেক ক্ষেত্রেই পরিকাঠামো এবং পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। তার ফলেই পড়ুয়া সংখ্যা কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে বলে মত অনেকের। মুখে মুখে এমন বদনাম ছড়িয়েছে যে, পড়ুয়ারা ওই কলেজগুলির উপরে বীতশ্রদ্ধ।
এ ব্যাপারে কী ভাবছে সরকারি কমিটি?
সৈকতবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি ভাল ভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। একেবারে বন্ধ না করে সেখানে অন্য ধরনের কোনও কোর্স চালু করা যায় কি না, বা ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ তৈরি করা যায় কি না— তা-ও দেখা হবে।’’