রায়গঞ্জের সমবায় ব্যাঙ্কে আয়কর কর্তারা

পাঁচশো, হাজার টাকার নোট বাতিলের পর রায়গঞ্জ কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে টাকা জমা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:১৪
Share:

পাঁচশো, হাজার টাকার নোট বাতিলের পর রায়গঞ্জ কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে টাকা জমা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। গত ১৬ নভেম্বর সেলিম কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ভাবে ওই ঘটনার তদন্তেরও দাবি জানান। ওই ঘটনার দু’দিনের মাথায় রায়গঞ্জে ওই ব্যাঙ্কের প্রধান শাখায় হানা দিলেন আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা।

Advertisement

শুক্রবার রাতে ও শনিবার দিনভর আয়কর দফতরের কলকাতা রেঞ্জের যুগ্ম ডিরেক্টর নানগো থাং জঙ্গীয় ও জলপাইগুড়ি রেঞ্জের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ইয়াল তেনজিংয়ের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ওই ব্যাঙ্কে গিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। গত ৯ থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাঙ্কের কোন শাখায় কার ব্যক্তিগত বা সমবায় অ্যাকাউন্টে আড়াই লক্ষ বা তার বেশি টাকা জমা পড়েছে, সেই তালিকা সংগ্রহ করেছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা। পাশাপাশি, ওই সময়ের মধ্যে কারা টাকা জমা দিয়েছেন, সেই সব অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের নাম, ঠিকানা ও তাঁদের ফোন নম্বরের তালিকাও তাঁরা সংগ্রহ করেন।

বিষয়টি নিয়ে আয়কর আধিকারিকেরা কিছু বলতে চাননি।

Advertisement

উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় রায়গঞ্জ কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের ১৬টি শাখা এবং এর অধীনে দুই জেলায় প্রায় দুশো সমবায় উন্নয়ন সমিতি রয়েছে। সমবায় সমিতির মাধ্যমে চাষিরা ঋণ পান। এই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকদের বেতনও হয়। এ ছাড়াও ওই ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্ট ও পড়ুয়াদের বিভিন্ন সরকারি অনুদান পাওয়ার জন্য জিরো ব্যালেন্সের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সব মিলিয়ে ওই ব্যাঙ্কে প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে।

গত ১০-১৪ নভেম্বর ওই ব্যাঙ্কের সমস্ত শাখা মিলিয়ে মোট ৪৭ কোটি টাকা জমা হয়েছে— এই অভিযোগ করে সেলিম এর তদন্তের দাবি করেন। তাঁর আরও অভিযোগ, সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক রাজ্য সরকারের অধীনস্থ। ওই ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতিও তৃণমূলের দখলে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শাসক দলের নেতারা ওই ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে কালো টাকাকে সাদা করার চেষ্টা করছেন। তার পরেই আয়কর দফতরের কর্তারা এলেন এই ব্যাঙ্কে। ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান মাসুদ মহম্মদ নাসিম এহসান অবশ্য দাবি করেছেন, আয়কর দফতরের কর্তারা রুটিনমাফিক তথ্য নিতেই ব্যাঙ্কে এসেছিলেন। তাঁর আরও বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম মেনেই ৯-১৫ নভেম্বর ব্যাঙ্কের ১৬ হাজার ৬৪০টি অ্যাকাউন্টে মোট ৫৮ কোটি ২১ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে। আয়কর দফতরের হাতে এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি ও তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সেগুলি খতিয়ে দেখে ক্লিন চিট দিয়েছেন। মাসুদের কথায়, ‘‘সেলিম কিছু না জেনে কলকাতা ও দিল্লিতে বসে সংবাদমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার কথা ভাবছি।’’ সেলিমের পাল্টা দাবি, উপযুক্ত ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন