চিকিৎসার গাফিলতিতে এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার উত্তেজনা ছড়াল এসএসকেএম হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। যদিও বিভাগীয় চিকিৎসকদের দাবি, কোনও গাফিলতি নয়, জন্মগত একটি জটিল রোগের কারণেই এই মৃত্যু।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার বজবজের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা চণ্ডের শিশুপুত্রটির জন্ম হয়েছিল গত ৩ ডিসেম্বর। গত সোমবার থেকে তার খিঁচুনি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
পড়ুন: দুই শিশু পুড়ে মৃত্যুর ঘটনায় সুপার-সহ ১১ জনকে শাস্তির নির্দেশ
এ দিন দুপুরে শিশুটির পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগে জানানো হয়েছে, নিওন্যাটোলজি বিভাগে যথাযথ নজরদারি ছিল না। ওয়ার্মারে অতিরিক্ত তাপেই মারা গিয়েছে সে। নিওন্যাটোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সুচন্দ্রা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এনসেফ্যালোপ্যাথি নিয়েই জন্মেছিল শিশুটি। ‘মেটাবলিক ডিসঅর্ডার’ও ছিল। শিশুটির রক্তের নমুনা হায়দরাবাদে পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট এলেই জন্মগত ওই ত্রুটিগুলির প্রমাণ পাওয়া যাবে বলে তাঁদের দাবি। তিনি বলেন, ‘‘ওয়ার্মারে পুড়ে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। ডাক্তাররা টানা ওয়ার্মারের পাশে ছিলেন। বুধবার রাত ন’টায় শিশুটি মারা গিয়েছে। বাড়ির লোকের সামনেই তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তখন তাঁরা কোনও অভিযোগ করেননি।’’
এ দিন দুপুরে শিশুটির পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। অবিলম্বে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের শাস্তির দাবি তোলেন তাঁরা। এসএসকেএমের অধিকর্তা মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওয়ার্মারে পুড়ে মৃত্যুর অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে অন্য কোনও গাফিলতি রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
গত ২০ নভেম্বর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিটে ওয়ার্মারে পুড়ে দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। তার তদন্ত রিপোর্ট এখনও পেশ হয়নি। তার আগেই ফের এমন অভিযোগ কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে ফেলেছে স্বাস্থ্য দফতরকে। মা ও শিশু মৃত্যু রোধে গঠিত টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় বিরক্ত হয়ে হলেন, ‘‘সব মা-ই এখন মনে করছেন তাঁর বাচ্চা ওয়ার্মারে পুড়ে মারা গিয়েছে। এ ভাবে চলতে থাকলে তো কাউকে ওয়ার্মারে রাখাই যাবে না।’’ ঠিক কী কারণে শিশুটির মৃত্যু হল? তাঁর জবাব, ‘‘শিশুটির ময়নাতদন্ত হয়েছে। তার রিপোর্ট এলেই সত্যিটা সকলের সামনে আসবে।’’