Teachers

প্রাথমিক শিক্ষক উচ্চ প্রাথমিকে, বাড়ছে জট

বুনিয়াদি শিক্ষা বা শিক্ষার প্রাথমিক স্তর আর মাধ্যমিক স্তরের মধ্যে আছে একটি উপ-বিভাগ— উচ্চ প্রাথমিক বা জুনিয়র হাই। ওই পর্যায়ে পঠনপাঠনের জন্য শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না ন’বছর ধরে।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:২৫
Share:

প্রাথমিকের শিক্ষক উচ্চ প্রাথমিকে পড়াতে চলে গেলে শিক্ষক কমে যাচ্ছে প্রাথমিকে। প্রতীকী ছবি।

ছেঁড়া প্যান্টের এক দিক সেলাই করতে গেলে আর একটা দিক ছিঁড়ে যাচ্ছে। প্রাথমিকের শিক্ষক উচ্চ প্রাথমিকে পড়াতে চলে গেলে শিক্ষক কমে যাচ্ছে প্রাথমিকে। পরিস্থিতি কতটা সঙ্গিন, ছেঁড়া পোশাক জোড়াতালি দেওয়ার প্রতীকে সেটাই তুলে ধরতে চাইছেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা।

Advertisement

বুনিয়াদি শিক্ষা বা শিক্ষার প্রাথমিক স্তর আর মাধ্যমিক স্তরের মধ্যে আছে একটি উপ-বিভাগ— উচ্চ প্রাথমিক বা জুনিয়র হাই। ওই পর্যায়ে পঠনপাঠনের জন্য শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না ন’বছর ধরে। প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাহায্য নিয়ে উচ্চ প্রাথমিক স্কুল বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকপদ প্রার্থীরা নিয়োগের দাবিতে ধর্না চালিয়ে যাচ্ছেন বহু দিন ধরে। তাঁদের প্রশ্ন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পেয়ে কি উচ্চ প্রাথমিকে পড়ানো সম্ভব?

রাজ্যের শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিকে নিযুক্ত কোনও শিক্ষক আইনত উচ্চ প্রাথমিকে পড়াতে পারেন না। তবে শিক্ষার স্বার্থে বা উচ্চ প্রাথমিক স্কুলকে বাঁচানোর তাগিদেই হয়তো তাঁরা পড়াচ্ছেন।’’ মালদহে হামিদপুরের কেকেজেএম প্রাথমিক স্কুলে নিযুক্ত মহম্মদ সফিকুল ইসলাম পড়াচ্ছেন সেখানকার জুনিয়র হাইস্কুলে। তিনি বলেন, ‘‘২০১২-র বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ২০১৪-য় প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পাই। এখন ওই স্কুলেরই জুনিয়র হাই-এ পড়াচ্ছি। ওখানে অনেক পড়ুয়া। এই ধরনের আরও এক শিক্ষক ওই স্কুলে পড়ান, আদতে যাঁর নিয়োগ হয়েছিল প্রাথমিকে।’’

Advertisement

রবিউল আলম নামে সেই ওই দ্বিতীয় শিক্ষক জানান, ২০১৭ সালে প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগপত্র পান তিনি। এখন উচ্চ প্রাথমিকে পড়াতে হচ্ছে। তাঁর উদ্বিগ্ন প্রশ্ন, তাতেও কি ওই উচ্চ প্রাথমিক স্কুল টিকবে? রবিউল বলেন, ‘‘পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে ২০৫ জন ছাত্র। শিক্ষক মাত্র দু’জন। কোনও ভাবেই সামলানো যাচ্ছে না। যখন ক্লাসে যাই, একসঙ্গে কয়েকটি বিষয় টানা পড়িয়ে কোনও ভাবে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করি।’’

উত্তর ২৪ পরগনার জেলা প্রাথমিক পরিষদও বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের সাময়িক ভাবে উচ্চ প্রাথমিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সন্দেশখালি উত্তর, হাড়োয়া, গাইঘাটা, হাসনাবাদের কিছু প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষককে উচ্চ প্রাথমিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সহ-সভাপতি সুশান্ত ঘোষের অভিযোগ, ‘‘ন’বছরে উচ্চ প্রাথমিকে একটাও নিয়োগ হল না। ১৪,৩৩৯টি শূন্য পদে নিয়োগ এখনও অধরা। অথচ অনেক চাকরিপ্রার্থী দু’বার ইন্টারভিউ দিয়ে বসে রয়েছেন।’’

এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘উচ্চ প্রাথমিকের মেধা-তালিকা আদালতে পেশ করতে শুনানির জন্য তারিখ চেয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন