নির্মাণে দেরির জরিমানা নিয়ে দ্বন্দ্বে কেন্দ্র-রাজ্য

২০০৮ সালে ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (কেএমডিএ) কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রকের অধীনে থাকা ‘ইনস্টিটিউট ফর স্টিল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড গ্রোথ’ নামে একটি সংস্থাকে বাইপাসের ধারে কসবার কাছে ১৮ কাঠা জমি দেয়।

Advertisement

সোমনাথ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৫৯
Share:

ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রের সঙ্গে ফের সংঘাতে রাজ্য! মাঝখানে এ বার এক ইস্পাতের বাড়ি।

Advertisement

২০০৮ সালে ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (কেএমডিএ) কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রকের অধীনে থাকা ‘ইনস্টিটিউট ফর স্টিল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড গ্রোথ’ নামে একটি সংস্থাকে বাইপাসের ধারে কসবার কাছে ১৮ কাঠা জমি দেয়। সেই সময়ে দু’পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে সেই জমিতে একটি পাঁচতলা ভবন তৈরি করার কথা ছিল। পুরোটাই ইস্পাতের। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ হয়নি। কাজ শেষ হয় ২০১৪ সালে ৩০ নভেম্বর। নির্মাণ শেষ হতে ২০ মাস দেরি হওয়ায় কেএমডিএ ওই সংস্থাকে প্রথমে ৭০ লক্ষ টাকা জরিমানা করে। সেই টাকা দিয়ে দেয় তারা। পরে আরও দু’কোটি টাকা জরিমানা বাবদ দাবি করে কেএমডিএ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রকের সংঘাত বেধে যায়। কেন্দ্রের ইস্পাত সচিব বিনয় কুমার এ রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে-কে চিঠি দিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান চেয়েছেন।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ইনস্টিটিউট ফর স্টিল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড গ্রোথ’ একটি অ-লাভজনক এবং অ-বাণিজ্যিক সংস্থা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইস্পাত দিয়ে অফিসবাড়ি তৈরি করার কাজ শুরু করেছে তারা। কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রক ইস্পাতের ব্যবহার বাড়ানোর জন্য ওই সংস্থাকে উৎসাহ দিচ্ছে। বিভিন্ন ইস্পাত সংস্থাও ওই সংস্থাটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

Advertisement

ওই সংস্থার পক্ষ থেকে নির্মাণে দেরির কারণ নিয়ে কেএমডিএ-কে ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, জমিতে জল জমে ছিল। গাড়ি ঢোকার কোনও রাস্তা ছিল না। তাই বাইরে থেকে ইস্পাত আনতে গিয়ে সময় লেগেছে। সেই সঙ্গে সংস্থার কিছু প্রশাসনিক সমস্যাও ছিল। এই সমস্ত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে জরিমানা মকুব করার আর্জি জানানো হয়। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। এর পরে বিষয়টি পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের গোচরে আনা হলে তিনি জরিমানা মকুব করার নির্দেশ দেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।

সম্প্রতি ওই ইস্পাত সংস্থাটি এই ঘটনার কথা কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রকের সচিবের গোচরে আনে। তার পরেই কেন্দ্রীয় ইস্পাত সচিব পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানান। কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে ওই সংস্থাকে জানানো হয়, জরিমানার দু’কোটি টাকা না দিলে ৯৯ বছরের লিজ় দেওয়া সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ‘রাষ্ট্রীয় ইস্পাত নিগম লিমিটেড’ সাব-লিজ়ে ওই ভবনের দু’টি তলা নিতে চায়। সেটাও আটকে গিয়েছে। তিন বছর ধরে এই পরিস্থিতি চলছে। তাই মলয় দে-র হস্তক্ষেপ চেয়েছেন কেন্দ্রীয় ইস্পাত সচিব বিনয় কুমার। নবান্নের কর্তারা বিষয়টি পুর সচিবকে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। কেএমডিএ-র সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুরমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement