যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া বিধিতে শৃঙ্খলাভঙ্গ সংক্রান্ত সংযোজন কে করল— এই প্রশ্নের নিষ্পত্তি হল না।
আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী আগেই বলেছিলেন, ‘‘রাজভবন থেকে এমন কোনও প্রস্তাব যায়নি। রাজ্য সরকারই বিশ্ববিদ্যালয়কে এই সংযোজনগুলি প্রস্তাব করেছে।’’ অন্য দিকে, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘সবাই ভাবছে, আমরা সংযোজন করেছি। কিন্তু আমাদের করণীয় কিছুই নেই। এটা কমিটির প্রস্তাব। আমি পুরো খসড়া বিধি দেখিওনি।’’
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মী-আধিকারিকদের বক্তব্য ছিল, রাজভবন এবং উচ্চশিক্ষা দফতর ছাড়া আর কোথাও তো খসড়া বিধি যাওয়ার কথাই নয়। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, আচার্য বা শিক্ষামন্ত্রী যদি সংযোজন সম্পর্কে অবহিত না হন, তা হলে এই কাজ কার!
শনিবার এক অনুষ্ঠানের শেষ সাংবাদিকরা এই নিয়ে প্রশ্ন করলে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আপনারা দেখেছেন, পড়েছেন আমি কী বলেছি। উনি (শিক্ষামন্ত্রী) কী বলেছেন, সেটাও দেখেছেন, পড়েছেন। এর মধ্যে কোনও কন্ট্রাডিকশন (বিরোধ) নেই। বিশ্ববিদ্যালয়কেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন।’’
এ দিন খসড়া বিধি নিয়ে রাজ্যপালের প্রতিক্রিয়ায় ধোঁয়াশা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সংগঠন জুটা-র সভানেত্রী নীলাঞ্জনা গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে খসড়া বিধি এসেছে রাজ্যভবন থেকে। কিন্তু রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি কোনও সংযোজন করেননি। শিক্ষামন্ত্রীও দাবি করছেন, তিনি কিছু জানেন না। তা হলে করল কে?’’
আরেক শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র যুগ্ম সম্পাদক গৌতম মাইতির মন্তব্য, ‘‘উভয় পক্ষই দায় না নেওয়ায় সরকারি কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। এমন ধোঁয়াশা প্রত্যাশিত নয়।’’ আবুটা এই নিয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বলেও গৌতমবাবু জানান।
২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধিত বিধি পাঠায় আচার্যের দফতরে। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের সচিবই পদাধিকার বলে আচার্যের সচিব। সেই কারণে ওই বিধিও তাঁর কাছেই পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি কিছু সংযোজনের প্রস্তাব-সহ ওই বিধি ফেরত এসেছে যাদবপুরে। সংযোজনে বলা হয়েছে, শিক্ষক, আধিকারিক বা শিক্ষাকর্মীদের কেউ সরকারের নীতির বিরোধিতা করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে। এর পরেই শিক্ষক সংগঠন জুটা এবং আবুটা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে।।