লড়াই এ বার ‘স্বচ্ছতা হি সেবা’-সঙ্গে ‘সেবাই পরমধর্ম’-এর।
দেশ জুড়ে ১৮ দিনের বিশেষ স্বচ্ছতা অভিযানের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ‘স্বচ্ছতা হি সেবা’ নামের এই অভিযান চলার কথা ২ অক্টোবর গাঁধী জয়ন্তী পর্যন্ত। সে দিন স্বচ্ছ ভারত গড়ার শপথ নিতেও রাজ্যকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠিকে চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। রাজ্য সরকার যাতে জাঁকজমকের সঙ্গে এই অভিযান পালন করে তা রাজ্যপালকে দেখতে বলেছেন তিনি। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাজ্যকে এই অভিযানে নামতে বলেছেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: সাত ঘণ্টা জেরার মুখে ববি
প্রধানমন্ত্রীর আবেদন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি তাঁকে না-লিখে রাজভবন মারফৎ জানানোয় অখুশি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনাথজি আমাকেই চিঠি দিতে পারতেন। মাননীয় রাজ্যপালের কাছ থেকে এ কথা জানতে হলো।’’ যদিও রাজভবনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘বহু ক্ষেত্রেই কেন্দ্র রাজ্যপালের মাধ্যমে সরকারকে অবহিত করে। বিশেষ করে রাষ্ট্রপতি ভবন বা শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে কেন্দ্রের থেকে রাজ্যপালের কাছে চিঠি আসার রীতি রয়েছে।
শুধু ঘুরপথে বিষয়টি জানানো নিয়েই নয়, কেন্দ্র যে ভাবে স্বচ্ছতা অভিযানের পরিকল্পনা করেছে, তাতেও আপত্তি রয়েছে মমতার। তাঁর যুক্তি, বাংলা আর বাঙালির মননে সেবাই হল পরমধর্ম। রাজ্য যে ভাবে সারা বছর সেবার ধর্ম পালন করে, কেন্দ্র সেই নীতি গ্রহণ করুক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মনে করি সেবাই পরমধর্ম। যা বছরভরের কাজ। দিন পনেরোর ব্যাপার নয়। এ কথা সোমবার লিখে দিল্লিকে জানিয়ে দিয়েছি।’’ নবান্নের সাফ কথা, বছর ভর স্বচ্ছতা-সেবার কাজ করেই নদিয়া, দুই ২৪ পরগনা, হুগলি, কোচবিহার, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা দিল্লির কাছ থেকেই নির্মল-জেলার তকমা জিতে নিয়েছে। তাই দু’সপ্তাহের ‘লোকদেখানো’ অভিযানে তারা নামবে না।
তৃণমূল সূত্র বলছে, তাদের আপত্তির আরও একটা বড় কারণ এই যে, ১৭ সেপ্টেম্বর নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনকেও এই স্বচ্ছতা অভিযানের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে কেন্দ্রের শাসক দল। সে দিন গোটা দেশে সাফাই কাজে নেমেছিলেন বিজেপির কর্মীরা। এ রাজ্যে এসে কালীঘাট মন্দির চত্বর ঝাঁট দিতে যান দলের কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। পুরসভা আগেভাগেই এলাকা সাফ করে রাখায় তা নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম হয়েছে।