কে গিয়েছিল পেমবা-উদ্ধারে, ধোঁয়াশা

এই অভিযানে পেমবার যে আত্মীয়েরা ছিলেন, তাঁরা অভিযোগ করেন, তখন ভারত-তিব্বত সীমান্ত বাহিনী বা আইটিবিপি-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও সাহায্য মেলেনি।

Advertisement

স্বাতী মল্লিক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ০৫:৫১
Share:

ফাইল চিত্র

সীমান্তবর্তী এলাকা। তাই দলের সঙ্গে কোনও লাইভ ট্র্যাকিং যন্ত্র বা স্যাটেলাইট ফোন ছিল না। উদ্ধারের সরঞ্জাম অবশ্য ছিল। কিন্তু সে সব কাঁধে নিয়েই ক্রিভাসের মধ্যে তলিয়ে যান পেমবা শেরপা। উপায়ান্তর না দেখে উদ্ধারের জন্য নিকটবর্তী কেন্দ্রীয় বাহিনীর শিবিরে যোগাযোগ করেন অভিযাত্রী দলের লোকেরা। যদিও ততক্ষণে বেশ খানিকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও কতটা সাহায্য মিলেছিল, তাই নিয়েই এখন সংশয় দেখা দিয়েছে। অভিযানে পেমবার সঙ্গে পরিবারের যাঁরা ছিলেন, তাঁরাই এখন বলছেন— কোনও সাহায্যকারী দল আসেনি।

Advertisement

কৃষ্ণনগর ও পুণের দু’টি পর্বতারোহণ সংগঠনের যৌথ অভিযানের সঙ্গী হয়ে কারাকোরাম পর্বতমালার সাসের কাংরি ফোর শৃঙ্গ (৭,৪১৫ মিটার) জয় করে তখন ফিরছিলেন পেমবা। সঙ্গে দাদা পাসাং শেরপা ও ভাইপো পেমবা ছিরিং। শুক্রবার সকালে আচমকাই ক্রিভাসে পড়ে যান পেমবা। প্রায় খালি
হাতেই এর পরে ২০ ফুট পর্যন্ত নামেন পেমবার সঙ্গীরা। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি।

এই অভিযানে পেমবার যে আত্মীয়েরা ছিলেন, তাঁরা অভিযোগ করেন, তখন ভারত-তিব্বত সীমান্ত বাহিনী বা আইটিবিপি-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও সাহায্য মেলেনি। পেমবার আর এক ভাইপো, তাঁর নামও পাসাং শেরপা, এ দিন চণ্ডীগড় থেকে ফোনে বলেন, ‘‘উদ্ধারকারী দল এসেছিল— এই খবর পুরো মিথ্যে। কেউ আমাদের সাহায্য করেনি।’’ আইটিবিপি-র দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, ‘‘এত বার করে বলেছি সাহায্যের জন্য, তা-ও এক জনও আসেননি।’’

Advertisement

বাংলার অভিজ্ঞ পর্বতারোহী বসন্ত সিংহ রায় এই অভিযানে গিয়েছিলেন। তিনি ফোনে শুধু বলেন, ‘‘২০ তারিখ সাংবাদিক বৈঠকে যা বলার বলব।’’ অন্য দিকে, ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশন বা আইএমএফ-এর পূর্ব কমিটির সেক্রেটারি দেবরাজ দত্ত জানাচ্ছেন, শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনার কথা জানতে পেরেই তাঁরা আইটিবিপি-কে জানান। দেবরাজের কথায়, ‘‘উপর থেকে নির্দেশ না এলে আইটিবিপি-র পক্ষে কিছু করা শক্ত। পরে শেরপাদের সঙ্গে কথা বলে ওঁরা বুঝতে পারেন যে, ক্রিভাস থেকে পেমবার সাড়া মিলছে না। তাই সব দিক বিবেচনা করেই সম্ভবত তাঁরা আর এগোননি।’’

পাসাংয়ের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও তাঁদের কেউ যে ঘটনাস্থলে যায়নি, সেটা আইটিবিপি-র তরফে প্রকারান্তরে মেনে নেওয়া হয়। আইটিবিপি-র জনসংযোগ আধিকারিক বিবেককুমার পাণ্ডে জানান, শনিবার তাঁদের একটি দল দুর্ঘটনাস্থলের দিকে যাওয়ার সময়েই পাসাং-ছিরিংদের সঙ্গে দেখা হয়। শেরপারাই প্রস্তাব দেন, আইটিবিপি-র ওই দলের থেকে যন্ত্রপাতি নিয়ে তাঁরা নিজেরা আর এক বার উদ্ধারের চেষ্টা করতে চান। পাণ্ডের কথায়, ‘‘পেমবার ভাই নিজেই বলেন যে, আমরা দেখে আসি। সেই মতো রবিবার তাঁরা নিজেরাই যান এবং সন্ধ্যায় নেমে এসে বলেন যে, আবহাওয়া খারাপ। উদ্ধার সম্ভব নয়। এমনকি, ওঁরা আমাদেরও উপরে যেতে বারণ করেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন