কলকাতায় কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ দেখানো হল নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দফতরে।—ফাইল চিত্র
বিজেপির হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়ছে কেন্দ্রীয় সব সংস্থা, এই অভিযোগ সামনে রেখে সিবিআইয়ের ডামাডোলের বিরুদ্ধে পথে নামল কংগ্রেস। কলকাতায় দলের রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ দেখানো হল নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দফতরে। একই প্রশ্ন তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হল তৃণমূলও। তার পাল্টা বিজেপি আবার মনে করিয়ে দিল, বাংলায় তৃণমূলের সরকার বিরোধীদের বিরুদ্ধে পুলিশ বা সিআইডিকে ব্যবহার করছে!
মধ্যরাতের সিদ্ধান্তে সিবিআইয়ের অধিকর্তা অলোক বর্মা ও বিশেষ অধিকর্তা রাকেশ আস্থানাকে যে ভাবে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার, সেই ‘বেআইনি প্রক্রিয়া’র বিরুদ্ধে গোটা দেশেই ধর্না ও বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। দলের সভাপতি রাহুল গাঁধী অভিযোগ করেছেন, বর্মা রাফাল চুক্তি নিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছিলেন বলেই তাঁকে অপসারিত হতে হয়েছে। এই গোটা বিষয়ে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দু’দিন রাজ্যে রাজ্যে দলকে কর্মসূচি নিতে বলেছে এআইসিসি। সেই নির্দেশ মেনেই এ দিন নিজাম প্যালেস চত্বরে বিক্ষোভ-সভা করে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন সোমেন মিত্র, প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নান, অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকারেরা। মাত্র কয়েক ঘণ্টার নোটিসে জমায়েত হয়েছিল ভালই।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবুর মন্তব্য, ‘‘সিবিআইকে নিয়ে মোদী সরকার যা করল, তাতে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা আর থাকে না। এর ফলে দুর্নীতিগ্রস্তদের হাতই শক্ত হবে!’’ প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত কমিটিতে আলোচনা করে সিবিআইয়ের প্রধান নিয়োগ করতে হয়। অথচ এই ক্ষেত্রে তা হল কোথায়, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কংগ্রেস নেতারা।
সোমেনবাবুদের সুরেই তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের মতো নিরপেক্ষ সংস্থাকে বিজেপি যে নিয়ন্ত্রণ করে, তা এ বার প্রমাণিত। দুর্নীতিগ্রস্ত একটা সরকার অন্যের দুর্নীতি খুঁজে বেড়াচ্ছ! এটাই সব চেয়ে বিপজ্জনক।’’ তার জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘আমাদের সিবিআইয়ের উপরে আস্থা আছে। তবে এই বদলে তৃণমূলের বিপদ আরও বাড়ল। ওরা যাদের ম্যানেজ করেছিল, তাদের বদল হল! সুতরাং, তৃণমূলের উল্লসিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। এ রাজ্যে পুলিশ কী করছে, সকলেই জানে। ভারতী ঘোষ তার বড় উদাহরণ!’’ দিলীপবাবুর মন্তব্য শুনে পার্থবাবুর আবার প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেউই আহ্লাদিত হচ্ছে না! উনি বরং এখন থেকে বিসর্জনের বাজনা বাজাতে শুরু করুন। এখানে একটাও পদ্মের ফুল ফুটবে না বলেই মনে হয়।’’