আরও এক কাউন্সিলর বলছেন ‘আমিও যাব’

২১ আসনের জঙ্গিপুর পুরসভা হাত বদল হয়ে গিয়েছিল একুশে জুলাইয়ে। পুরপ্রধান মোজারুল হোসেনের হাত ধরে বাম-বিজেপি-র এগারো জন কাউন্সিলর বুধবার রাতেই রওনা দিয়েছিলেন কলকাতায়। শহিদ দিবসে, ধর্মতলার মঞ্চে কিঞ্চিৎ দেরিতে পৌঁছনোয় দলবদলটা প্রকাশ্যে হয়নি, এই যা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০১:৩০
Share:

কবিতা মণ্ডল।—নিজস্ব চিত্র

রইল বাকি নয়!

Advertisement

২১ আসনের জঙ্গিপুর পুরসভা হাত বদল হয়ে গিয়েছিল একুশে জুলাইয়ে। পুরপ্রধান মোজারুল হোসেনের হাত ধরে বাম-বিজেপি-র এগারো জন কাউন্সিলর বুধবার রাতেই রওনা দিয়েছিলেন কলকাতায়। শহিদ দিবসে, ধর্মতলার মঞ্চে কিঞ্চিৎ দেরিতে পৌঁছনোয় দলবদলটা প্রকাশ্যে হয়নি, এই যা।

দলত্যাগীদের দেখাদেখি, শুক্রবার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলার কবিতা মন্ডলও জানিয়ে দিলেন, ‘‘আমি যাচ্ছি তৃণমূলে।’’

Advertisement

রুশ উপকথা ‘হাঁসের ছানা’র অনুকরণে এ দিন তিনি জানান, ‘‘জঙ্গিপুরের যে ১১ জন কাউন্সিলার তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে আমিও আছি।’’ কেন? তেমন যুক্তি দেকাতে পারেননি তিনি। কবিতার কথায়, ‘‘এমনিই, আসলে ওই দিনই যেতাম। স্বামীর অসুস্থতার জন্য কলকাতা যেতে পারিনি।” প্রসঙ্গত, কবিতার স্বামী প্রাক্তন জঙ্গিপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি রঞ্জিত মণ্ডল অবশ্য জানিয়েছেন, এখনই কংগ্রেস ছাড়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই।

দলবদলের এই ঘটনা অবশ্য ভাল ভাবে দেখছেন না জঙ্গিপুরের সাংসদ কংগ্রেসের অভিজিত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “খুব অন্যায় ও অনৈতিক কাজ হয়েছে।”

ক্ষুব্ধ অভিজিত বলেন, “পুর এলাকার মানুষের ভোট দিয়েছেন আর তাঁদের সঙ্গেই এ বাবে প্রতারণা!’’ সিপিএমের এক নেতাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘দলত্যাগীদের উচিত যদি বিন্দুমাত্র সততা থাকে তবে অবিলম্বে পদত্যাগ করে পুনরায় মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসা উচিত। এটাই গণতন্ত্রের দাবি।”

শুধু অভিজিতই জঙ্গিপুর পুরসভায় এভাবে পালা বদলের ঘটনায় রীতিমত হতবাক শহরের বেশির ভাগ মানুষই। স্কুল, কলেজ, চায়ের দোকানে আলোচ্য একটাই— দলবদল। ম্যাকেঞ্জি মোড়, সদরঘাট, গফুরপুর বরজ সর্বত্রই বিস্ময়— সে কিরে এ ভাবে বামেদের ৩৫ বছরের পুরসভা উল্টে দিল!’’

শুধু অভিজিতই নয়, জঙ্গিপুর পুরসভা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন রঘুনাথগঞ্জের বিধায়ক আখরুজ্জামানও। তিনি বলেন, “এ ভাবে টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া ঘণতন্ত্রেকর পক্ষে ক্ষতিকর। তাহলে আর নির্বাচনের, মানুষের রায়ের প্রয়োজনটা কোথায়?’’

প্রদেশ কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক মইনুল হকের কথায়, “এ ভাবে পঞ্চায়েত , পুরসভা জবরদখলে রাজনৈতিক কোনও লাভ নেই। আজ শাসক দল সঙ্গে আছে। কাল মানুষ সঙ্গে থাকবে না।’’

আর তৃণমূল সূত্রে খবর: যিনি এই দলবদলের ‘কারিগর’ সেই জাকির হোসেন সবই শুনেছেন। তবে, পাল্টা মন্তব্য করতে চাননি। শুধু বলেছেন, ‘‘পুরো বিষয়টি দেখছে দল। তাই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”

যা শুনে জঙ্গিপুরের এক প্রবীন বাসিন্দা বলছেন— ‘‘বাস্তবিক, এই অবস্থায় মন্তব্য করা মানে তো, আসল ঘটনাটাই বলা, তা কী আর জাকির বলতে পারবেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন