তৃণমূলকে রুখতে হবে। আবার প্রধান বিরোধী দল হিসাবে বিজেপি-র দ্রুত উত্থানও ঠেকানো চাই। এই লক্ষ্যে রাজ্যে আসন্ন তিনটি উপনির্বাচনে বামেদের সঙ্গে যৌথ লড়াই চাইছে কংগ্রেস। এই মর্মে সিপিএমের কাছে ঘরোয়া ভাবে প্রস্তাবও পাঠিয়েছে তারা। কিন্তু পার্টি কংগ্রেসে দলের রাজনৈতিক লাইন নিয়ে ফয়সালা হওয়ার আগে বামেদের পক্ষে এই ব্যাপারে পা বাড়ানো মুশকিল। আবার পিছিয়ে এলেও বিজেপি-কে সুবিধা করে দেওয়ার অভিযোগ উঠবে! আপাতত তাই প্রস্তাব ঝুলিয়ে রেখেছে বামেরা। এই গড়িমসিতে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও উলুবেড়িয়া লোকসভা এবং সবং ও নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন আসন্ন। লোকসভা আসনটি ছিল তৃণমূলের দখলে। আর দু’টি বিধানসভা আসনই ২০১৬ সালের নির্বাচনে বামেদের সমর্থনে জিতেছিল কংগ্রেস। এ বার প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান চাইছেন, গত বছরের সূত্র মেনেই দু’টি বিধানসভা আসনে বামেদের সমর্থন নিয়ে প্রার্থী থাকুক তাঁদের। দু’টি আসনই যে হেতু কংগ্রেসের হাতে ছিল, তাই তাদের প্রার্থী দেওয়া নিশ্চিত বটেই। আর উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে সে ক্ষেত্রে বামেরা লড়াই করুক। কংগ্রেস সেখানে প্রার্থী দেবে না। বিষয়টি নিয়ে এআইসিসি-র মতও জানতে চেয়েছিলেন প্রদেশ নেতৃত্ব। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এআইসিসি এই বিষয়ে সিদ্ধান্তের ভার প্রদেশের উপরেই ছেড়ে দিয়েছে। তার পরেই বামেদের মন বুঝতে চেয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
বিধানসভা ভোটের পর থেকেই সিপিএমের অন্দরে বির্তক চলছে কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী আঁতাঁতের প্রশ্নে। দলের পলিটব্যুরোর ফরমান মেনে সম্প্রতি দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভার উপনির্বাচনে একা লড়ে পর্যুদস্ত হয়েছে বামেরা। বিজেপি-ই সেখানে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে। এ বারও উলুবেড়িয়ায় মেরুকরণের অঙ্কে তৃণমূলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠে আসছে বিজেপি। সিপিএমের রাজ্য নেতাদের বড় অংশেরই আশঙ্কা, এ বার উপনির্বাচনে চতুর্মুখী লড়াই হলে দক্ষিণ কাঁথির পুনরাবৃত্তি হতে পারে! তা-ও তাঁদের হাত পা বাঁধা!
ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি একজোট হয়ে উপনির্বাচনে লড়বে কি না, সেই ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলছেন, ‘‘এখনও সময় আছে। এই নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে। এখনও কোনও আলোচনা হয়নি।’’ তবে বামেদের মতিগতি সুবিধার নয় বুঝেই প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কটাক্ষ, ‘‘মুসলিমদের পার্সোনাল ল সংশোধন হয়ে যেতে পারে। সিপিএমের পার্টি লাইন বদলানো তবু অসাধ্য!’’